'ওমর ফারুককে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে চার টুকরা করা হয়'

সংগৃহীত ছবি

চাচা ও তাঁর শ্যালকসহ গ্রেপ্তার ৩

'ওমর ফারুককে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে চার টুকরা করা হয়'

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভকে ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে তার চাচা ও শ্যালক। পরে মরদেহ বাথরুমে নিয়ে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে চার টুকরো করে রঙের লাগেজে ভরা হয়।  

এরপর রাতের আঁধারে একটি প্রাইভেটকারে করে ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের মনতলা ব্রিজের নীচে সুতিয়া নদীর কচুরিপানাতে মরদেহ ভর্তি লাগেজটি ফেলে দেয়।

মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের এমন লোমহর্ষক বর্ণনা দেন।

 

এর আগে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার করে ওমর ফারুকের চাচা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইলিয়াস আলী ও তার শ্যালক আহাদুজ্জামান ফারুককে।

হত্যাকারীদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ তারাটি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর সন্তান ওমর ফারুকের সঙ্গে তারই চাচাতো বোনের প্রেমের সম্পর্ক ছোটবেলা থেকে। দুই পরিবারই এ সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় তাদের মধ্যে মান-অভিমান চলছিলো। পরিস্থিতি বেগদিক দেখে তিন বছর আগে ইউসুফ আলীর ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইলিয়াস আলীর স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ইভা আক্তারের সঙ্গে কানাডা পড়ুয়া আব্রাহাম এর সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করে।

কিন্তু সৌরভ ইভার অন্যত্র বিয়ের বিষয়টি মানতে পারেনি।

পরিবারকে না জানিয়ে গত ১২ মে ইভা ও সৌরভ গোপনে বন্ধুদের নিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এ খবর জানাজানি হলে ইভার পরিবার মেনে নেয়নি। মেয়ে ইভাকে গত ১৬ মে কানাডা পূর্বের স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সৌরভ ১লা জুন ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ আসে ইভার পূর্বের শ্বশুড়ের কাছে। তার কাছে ওমর ফারুক তাদের প্রেম-ভালোবাসার বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরে চলে যায়। বিষয়টি ইলিয়াস জানতে পেরে পুত্র মৃদুলকে দিয়ে মোবাইল ফোনে ময়মনসিংহ নগরীর গোহাইলকান্দি ভাড়া বাসায় ডেকে নেয়। সেখানে ইলিয়াছ তার শ্যালক ফারুককেও ডেকে আনে। এরপর দুজনে মিলে সৌরভের হাত-পা বেঁধে মাথায় ধাঁরালো ছুরি দিয়ে আঘাতে হত্যা করে।

খুনের মোটিভ বা খুনিরা যাতে ধরা না পড়ে সে জন্য হত্যাকারি ইলিয়াস ও ফারুক আঙ্গলের ছাপ কেটে নষ্ট করে ফেলে। রাতেই একটি প্রাইভেটকার ভাড়ায় এনে মরদেহ ভর্তি লাগেজটি তুলে নগরীর আকুয়া বাইপাসসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে অবশেষে ময়মনসিংহ-মুক্তাগাছা সড়কের মনতলা ব্রিজের নীচে সুতিয়া নদীর কচুরিপানাতে মরদেহ ভর্তি লাগেজটি ফেলে আসে বলে জানান পুলিশ সুপার।

গত ২ জুন রোববার ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা সেতুর নিচে সুতিয়া নদীর উপর একটি কালো ব্যাগ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে তদন্তে নামে। এ ঘটনায় সৌরভের পিতা বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

news24bd.tv/কেআই

এই রকম আরও টপিক