ছেলে খুনের খবরে মারা গেলেন মা

খুন

ছেলে খুনের খবরে মারা গেলেন মা

বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাকে দেখতে এসে ফেরার পথে খুন হয়েছেন গাইবান্ধার এক ব্যবসায়ী। ছেলের সেই মৃত্যুর খবরে মারা গেছেন চিকিৎসাধীন মা।

বগুড়ার কাহালু থানা-পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সৈয়দ আপেল মাহমুদ(৩২) নামের ওই ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে।

নিহত আপেল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ফাঁসিতলা মোঘলটুলি এলাকার সৈয়দ আব্দুল ওহাব দীপ্তির ছেলে।

তিনি ‘ইনডেক্স বিজসেন কো-অপারেটিভ সোসাইটি’ নামে একটি অর্থিক লেনদেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। পাশাপাশি ফাঁসিতলা এলাকায় একটি ময়দা মিলের মালিক ছাড়াও আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করতেন তিনি।

এ তথ্য নিশ্চিত করে কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবির জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে থানায় খবর আসে উপজেলার বারমাইল-নামুজা সড়কে ছাতারপুকুর এলাকায় মাঠে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ পড়ে আছে। পুলিশ রাত সাড়ে ১১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই মরদেহ উদ্ধার করে।

সে সময় ওই এলাকার কেউ তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ থেকে কিছু মানুষ থানায় গিয়ে লাশটি ফাঁসিতলার ব্যবসায়ী আপেলের বলে সনাক্ত করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

হাসপাতালে লাশ নিতে আসা নিহত আপেলের চাচা সৈয়দ আশরাফুল আলম মানিক জানান, তাঁর মা আয়েশা বেগম(৫২) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বগুড়ার টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃহস্পতিবার বিকেলে আপেল তার মাকে দেখতে ওই হাসপাতালে যান। এরপর সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে হাসপাতাল থেকে বের হন। কিন্তু সন্ধ্যা সাতটার পর থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। সারা রাত বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁর সন্ধানে নেমে পড়েন। এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা জানতে পারেন কাহালুতে ওই বয়সী এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা সেখানে গিয়ে লাশটি আপেলের বলে সনাক্ত করেন। আপেল খুন হয়েছে এই খবর পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মা আয়েশা বেগম শুক্রবার দুপুরে মারা গেছেন।

আপেলের ভগ্নিপতি একরামুল হক জানান, আপেল ছিলেন পরিবারে সবচেয়ে ভালো মানুষ। তার কোনো শত্রু ছিল না। তাকে কেন খুন করা হলো তারা বিষয়টি বুঝতে পারছেন না। তিনি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেন।

কাহালু থানার ওসি শওকত কবির বলেন, সম্ভবত দুর্বৃত্তরা পথিমধ্যে তাকে তুলে নিয়ে হত্যার পর কাহালু থানা এলাকায় লাশটি ফেলে রেখে যায়।

তিনি বলেন, গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর লাশে পাশে কয়েকটি চাবি, কিছু নগদ টাকা এবং কলম পড়ে ছিল। হত্যার কারণ তাৎক্ষনিক জানা সম্ভব হয়নি। তাঁর পরিবার এ বিষয়ে মামলা দায়ের করলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/রউফ/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর