আইএস প্রধান বাগদাদির স্ত্রী হুদাইফা কারাগার থেকেই জানালেন অনেক অজানা তথ্য  

হুদাইফা, বোরখা পরে এভাবেই ইন্টারভিউ দেন । ছবি, বিবিসি।

আইএস প্রধান বাগদাদির স্ত্রী হুদাইফা কারাগার থেকেই জানালেন অনেক অজানা তথ্য  

আইএস প্রধান আল-বাগদাদির চারজন স্ত্রীর একজনের নাম হুদাইফা। আল-বাগদাদির দুই স্ত্রী মারা গেছেন সালে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। ২০১৯ সালে। এর আগে ২০১৮ সালে হুদাইফা আটক হন।

চলতি বছরের  ফেব্রুয়ারিতে ইরাকে ফেরত পাঠানো হয় হুদাইফাকে। এখন বাগদাদের কারাগারে বন্দী জীবন কাটছে তাঁর। হুদাইফার একটা বিশেষ ইন্টারভিউ আজ সোমবার ( ১০ জুন ) প্রকাশ করেছে বিবিসি। বেশ সাড়া জাগিয়েছে এটি।
 
এ সাক্ষাৎকারে হুদাইফা অনেক কথা বলেছেন। তিনি জানান , বাগদাদি প্রথম তাকেই বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রথম কয়েকমাস তাদের ভালোই কেটেছিল। পরে একসময় তিনি বাগদাদির কিছু আচরণে সন্দেহ করা শুরু করেন। কারণ একদিন বাসায় বসে টিভিতে দেখেন,ইরাকের উত্তরাঞ্চলের মসুলের আল-নুরি মসজিদ থেকে বক্তব্য দিচ্ছেন তাঁর স্বামী। সেখানে নিজেকে আইএস খিলাফতের প্রধান হিসেবে পরিচয় দেন।
এরপর হুদাইফা বাগদাদি যখন বাসায় থাকতেন না তখন গোপনে লুকিয়ে তার সব জিনিসপত্র দেখতেন এবং নিশ্চিত হন যে সে একটা জঙ্গী গোষ্ঠীর নেতা। পরে তার হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করেন।  
কিন্তু বাচ্চাদের মায়ায় পারেননি।  
হুদাইফা জানান, ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণ করে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী। পরের বছর মার্কিন বাহিনীর হাতে আটক হন আল-বাগদাদি। বছরখানেক তাঁকে ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের বুকা শিবিরে রাখা হয়। আইএস ও বিভিন্ন জিহাদি সংগঠনের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাও সেখানে বন্দী ছিলেন।
হুদাইফা জানান, মুক্তি পাওয়ার পর থেকে তাঁর স্বামী বদলে যেতে শুরু করেন। তিনি বদমেজাজি হয়ে যান। রেগে গেলে চিৎকার করতে শুরু করেন। এমনকি মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন। এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে বলতেন, তুমি বুঝবে না। হুদাইফার ধারণা, কারাগারে তাঁর স্বামী যৌন নির্যাতনের  শিকার হয়েছিলেন। তখন ইরাকের আবু গারিব কারাগারে মার্কিন সেনাদের এমন নির্যাতনের ছবি বিশ্বজুড়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল।
বিবিসির কাছে হুদাইফা তার স্বামীর পথ ও মত সমর্থন করেন না বললেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে অনেক অভিযোগ। যেমন আইএসে যেসব মেয়েরা যোগ দিতো তাদের যৌনদাসী বানাতে তিনি জোর করতেন। তবে 
আইএস সদস্যদের দ্বারা অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার ইয়াজিদিদের করা মামলায় হুদাইফার বিরুদ্ধে অপহৃত মেয়ে ও নারীদের জোরপূর্বক যৌনদাসী বানানোর অভিযোগ রয়েছে।  
ইয়াজিদিদ স্পষ্ট বলেন, যে হুদাইফা নারীদের আইএস সদস্যদের কাছে তুলে দিতেন।  
কিন্তু হুদাইফা বিবিসিকে বলেন, না তিনি নারী হয়ে আরেক নারীর ক্ষতি করতে পারেন না। তবে আইএস সদস্যরা মেয়েদের যৌনভাবে যথেচ্ছ ব্যবহার করত।  
তিনি বলেন, বাগদাদিও নারী লোভী ছিলেন। এটি তিনি পরে টের পেয়েছেন।  
হুদাইফার জন্ম ১৯৭৬ সালে, একটি রক্ষণশীল ইরাকি পরিবারে। ১৯৯৯ সালে ইব্রাহিম আওয়াদ আল-বাদরির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরে আবু বকর আল-বাগদাদি নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন ইব্রাহিম। যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আল–বাগদাদি ২০১৯ সালে নিহত হন।

তাদের পাঁচ সন্তান। তিন ছেলে, দুই মেয়ে। বড় মেয়ে উমাইমা কারাগারে মায়ের সঙ্গে রয়েছে। ১২ বছরের ফাতিমাকে একটি কিশোর বন্দিশালায় রাখা হয়েছে। এক ছেলে সিরিয়ার হোমসে রুশ বিমান হামলায় মারা গেছে । আরেকজন বাবার সঙ্গে একই দিন মারা গেছে।  আর সবচেয়ে ছোট ছেলেটি একটি এতিমখানায় থাকছে।  

news24bd.tv/ডিডি


 

এই রকম আরও টপিক