চট্টগ্রামে নারী অপহরণ: আসলে কী ঘটেছিল

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় এই সিএনজিতে ওই নারীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামে নারী অপহরণ: আসলে কী ঘটেছিল

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নারী কর্মীকে অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ে গত বৃহস্পতিবার(৮ আগস্ট)। সেই সাথে ওই নারীকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও ওই নারীকে অপহরণের কথা বলা হয়। পরবর্তীতে, বিষয়টি শোনার পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই নারীকে উদ্ধার করেন।

আদতে ওই নারীকে অপহরণ করা হয়নি। তাঁকে তাঁর বাবা ও স্বামী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় তিনি চিৎকার করছিলেন, ফলে এই ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হয়।

গতকাল (৮ আগস্ট) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে ওই নারীর সন্ধান পাওয়া যায়। তবে তিনি অপহরণের স্বীকার হননি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে গতকাল একটি সভার আয়োজন করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। সভার একপর্যায়ে সমন্বয়কেরা জানান, চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে এক নারীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। তাঁকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নেওয়া হয় বলে জানান তাঁরা।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা হলে, তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। সেই সুবাদে বিকেল ৪টার দিকে আগ্রাবাদ এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সিএনজি অটোরিকশাটিকে আটক করা হয় বলে জানা যায়। চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, ওই নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নামিয়ে দিয়েছেন।

পরবর্তী সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রদের নিয়ে হাসপাতালের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করেন সেনাবাহিনীর সদস্য ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঈনুল হাসান। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মনোরোগ বিভাগ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে।

ওই নারীর স্বামী জানান, তাঁদের শিশুসন্তান চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গত বুধবার রাত থেকে তাঁর স্ত্রী অসংলগ্ন আচরণ করছেন এবং উপস্থিত আত্মীয়স্বজনকে আঘাত করছেন। তাই গতকাল তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আনার সময় অটোরিকশা থেকে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন তাঁর স্ত্রী। তাতে সবার ভুল ধারণা হয় যে, তাঁকে অপহরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওই নারী সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকেন। আশপাশের লোকজনের কাছে সাহায্য চাইতে থাকেন যে তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন আছেন।

news24bd.tv/JP