সংখ্যালঘু পরিবারে হামলা: ঘটনার নেপথ্যে টাকা-পয়সার লেনদেন

প্রতীকী ছবি

সংখ্যালঘু পরিবারে হামলা: ঘটনার নেপথ্যে টাকা-পয়সার লেনদেন

অনলাইন ডেস্ক

যশোরে একটি সংখ্যালঘু পরিবারে হামলা ও লুটপাট করে কিশোরকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ৮টার দিকে মণিরামপুরে উপজেলার জালালপুর ঘোষ পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। অপহরণের শিকার কিশোরের নাম পিয়াশ ঘোষ (১৪)। সে স্থানীয় বাসিন্দা পলাশ ঘোষের ছেলে ও স্থানীয় জালালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।

স্থানীয়রা জানায়, সংখ্যালঘু পরিবারে হামলা ও কিশোরকে অপহরণের খবরে তারা এগিয়ে আসে। পরবর্তীতে, প্রায় চার ঘণ্টা পর ওই কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আবুল হাসান। তার বাড়ি উপজেলার শাহপুর এলাকায়।

অভিযুক্ত আবুল হাসান একটি দাখিল মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।

অপহরণের শিকার কিশোরের বাবা পলাশ ঘোষ বলেন, ‘৫-৭ বছর আগে আবুল হাসান আমার কাছ থেকে লাভের ওপর (সুদ দিয়ে) তিন লাখ টাকা নেন। সেই টাকা পরে পাঁচ লাখে দাঁড়ায়। স্থানীয়ভাবে সলিস দরবার করে টাকা আদায় করতে পারিনি। এক পর্যায়ে আবুল হাসান আমাকে পাঁচ লাখ টাকার একটা চেক দেন। পরে ব্যাংকে গিয়ে টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা করি। সেই মামলায় আবুল হাসানের পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ও এক বছরের সাজা দেন আদালত। ওই মামলায় কিছু দিন জেল খেটে, আদালতে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। ’

পলাশ ঘোষ আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ৭-৮টি মোটরসাইকেলে চড়ে আবুল হাসান, তার ছেলেসহ ১৫-২০ জন লোক আমার বাড়িতে আসে। আমার সন্তানের গলায় ছুরি ধরে ১০ লাখ টাকা দাবি করে। আমাকে মারধর করে বাড়িতে লুটপাট করে। হামলাকারীরা আমার স্ত্রী ও মায়ের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। দাবি করা ১০ লাখ টাকা না পেয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নেয়। পরে আমার মোটরসাইকেলসহ ১৪ বছরের ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ’

অপহরণের শিকার পিয়াস ঘোষ বলেন, ‘আমাকে নিয়ে গিয়ে একটি আমবাগানে বসিয়ে রাখে। বাড়িতে ফোন করে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। পরে রাত ১২টার দিকে গলদা বাজারে এনে ছেড়ে দেয়। ’

ঘটনার পরে অভিযুক্ত আবুল হাসানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উদ্ধারকারী খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শামসুজ্জামান শান্ত বলেন, ‘টাকা-পয়সার লেনদেনকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার জামিনে বেরিয়ে লোক ভাড়া করে এনে এই ঘটনা ঘটায় হাসান মাস্টার। আমি মোটরসাইকেল ও কিশোরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছি। ’

মণিরামপুর থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, এই বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

news24bd.tv/JP