হাত-পা বিকলাঙ্গ, তবুও পরীক্ষা দিচ্ছে রিমা

প্রতিবন্ধী রিমা

হাত-পা বিকলাঙ্গ, তবুও পরীক্ষা দিচ্ছে রিমা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

এক পা নেই, আরেক পাও স্বাভাবিক নয়। বাম হাতের চারটি আঙ্গুল নেই, আর ডান হাতের কব্জি সরু, আঙ্গুলগুলোও অচল। তবুও কৃত্রিম পায়ে চলাফেরা, আর সেই সরু কব্জির হাত নিয়েই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে খাদিজা আক্তার রিমা। জীবনের যুদ্ধসম পথ চলায় প্রাথমিক ও জুনিয়র পরীক্ষার গন্ডি পেরিয়েছে, এবার মাধ্যমিকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে চায় সে।

নাটোর সদর উপজেলার কদমতলি বাজারের তেঘরিয়ার লূৎফর রহমান ও হাসি খাতুন দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে খাদিজা আক্তার। আর ছোট ছেলে রোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তবে ছোট বেলা থেকেই খাদিজা তার নানা আশকান প্রামানিকের বাড়িতে থেকেই পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে। নানার বাড়ি বাগাতিপাড়া উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড়ের জামতলা মোড়ে।

সে উপজেলার ফাগুয়াড় দিয়াড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বাগাতিপাড়া সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫ নম্বর কক্ষে শনিবার প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাকে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়।

পরীক্ষা শেষে কথা হয় তার সঙ্গে। সে জানায়, সে প্রতিবন্ধী হওয়ায় মামী মেরিনা আক্তারের সঙ্গে কেন্দ্রে আসে। কৃত্তিম পায়ে চলাফেরা আর অস্বাভাবিক হাতে লিখতে অসুবিধা হয়। তবুও এগিয়ে যেতে চায় সে। বড় হয়ে সমাজের সেবামূলক পেশায় আত্মনিয়োগ করতে চায় খাদিজা।

তার সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসা মামী মেরিনা আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল খাদিজার। প্রতিদিন ঝড়বৃষ্টি, রোদ, কাদাপানি উপেক্ষা করে কৃত্রিম পায়ে ভর দিয়ে নিয়মিত স্কুলে যেত সে। তার এ ইচ্ছার কারণেই নিজের বাড়িতে রেখে তাকে সহযোগিতা করছি।

ফাগুয়াড় দিয়াড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, খাদিজা আক্তার রিমা বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার পড়ালেখার প্রতি আগ্রহের কথা চিন্তা করে তাকে আমরা বিনা টাকায় ফরম পূরণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। সে পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাবে বলে আমরা খুব আশাবাদী।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাসিম/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর