অজ্ঞাত রোগে একই পরিবারের পাঁচ জনের মৃত্যু

ছবি সংগৃহীত

অজ্ঞাত রোগে একই পরিবারের পাঁচ জনের মৃত্যু

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী মরিচপাড়া গ্রামে ১৫ দিনে অজ্ঞাত রোগে জামাইসহ একই পরিবারের পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত হয়ে আরও চারজন চিকিৎসা নিচ্ছেন।  

মৃত্যু আতঙ্কে আছে গ্রামবাসী। এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

সেই সঙ্গে ওই গ্রামের এক কিলোমিটারের মধ্যে সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।  

কখনো তীব্র জ্বর, কখনো ঠাণ্ডা, গোটা শরীরে ব্যথা আর জ্বালা পোড়া-এমন উপসর্গ নিয়ে বালিয়াডাঙ্গীর মরিচপাড়া গ্রামের ইউসুফ আলী ও তার ছোট ভাই মেহেদী হাসানকে রোববার সকালে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে ইউসুফ মারা যায়। আর তার ছোট ভাই মেহেদী রংপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন রাতে মারা যায়।

 

এদিকে জ্বর ও ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে গত ২১ ফেব্রুয়ারি মারা যায় ইউসুফের মা হোসনে আরা ও ভগ্নীপতি হবিবুর রহমান। এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় ইউসুফের বাবা আবু তাহের।  
জামাইসহ একই পরিবারের ৫ সদস্য একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরায় এলাকায় নামে মৃত্যু আতঙ্ক। ওই পরিবারের আরও ৩ জন ও সালমা নামে একজন প্রতিবেশী এবং একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক আক্রান্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে চারজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  

আক্রান্তরা হলেন- মৃত ইউসুফের স্ত্রী কহিনুর বেগম, ছেলে আবির হোসেন, শ্বশুর রবিউল ইসলাম এবং প্রতিবেশী সালমা বেগম ও অ্যাম্বুলেন্স চালক মোতালেব। সালমা ওই গ্রামে স্থানীয়ভাবে ঝাঁর-ফুক চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে। আর অন্যরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, এ অবস্থায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ হিসেবে নিহতদের বাড়ি থেকে আশপাশের এক কিলোমিটারে জনগণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই বাড়িতে যেন কোনও মানুষ চলাচল না করে সেজন্য সেখানে গ্রামপুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ওই গ্রামের মানুষদের ২শ’ মাস্ক দেয়া হয়েছে।  

ঘটনাস্থলে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেয়ার জন্য একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে।
তবে আতঙ্ক হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে আক্রান্তদের নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা।  

ঠাকুরগাঁও ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মো. শাহজাহান নেওয়াজ জানান, ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার ঢাকা থেকে এসেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের একটি বিশেষজ্ঞ দল এসেছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর