বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে কেউ কেউ বর্তমান সময়টাকে ক্রান্তিকাল বলে অভিহিত করছেন। কথাটিকে আমার কাছে তাৎপর্যপূর্ণ মনে হচ্ছে। প্রগতিশীল রাজনীতির জন্য সময়ের প্রকৃতিকে বোঝা একান্ত দরকার। ক্রান্তিকাল কথাটি আমি প্রথম শুনেছিলাম রাজনীতিক ও সাংবাদিক আনোয়ার জাহিদ এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের এককালীন সাধারণ সম্পাদক কাজী জাফর আহমদের বক্তৃতায়।
সেটি ১৯৬২ সালের শেষ দিকের কথা। তারা দুজনই তখন পরিচিত ছিলেন বামপন্থী বলে। জাহিদ ভাইয়ের ছিল অত্যন্ত সুন্দর চেহারা, বিলাসিতাহীন সুন্দর পোশাক-আশাক, সুমিষ্ট কণ্ঠস্বর, বাংলা ও ইংরেজিদুই ভাষায়ই পাণ্ডিত্যপূর্ণ ও আবেদনশীল বক্তব্য দেওয়ার সামর্থ্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিবর্গের অপকর্মের নানা দৃষ্টান্ত তিনি পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে বলতেন।
যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার কথা বলতেন। বক্তব্যে তিনি...
গত ৫ আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণবিপ্লব বা মহা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশ ফ্যাসিবাদী শাসন বা স্বৈরাচার থেকে সাময়িকভাবে মুক্ত হলেও জাতিগতভাবে সংকটমুক্ত হতে পারেনি, বরং সমগ্র দেশটি অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিভিন্ন সমস্যা কিংবা আরো জটিল সংকটে নিমজ্জিত হওয়ার পথে পড়েছে। জনগণের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন দেশীয় অপশক্তি এবং বিদেশি আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্রকারীদের বহুমুখী চাপের মধ্যে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। ফলে জাতিগতভাবে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়টি এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ অবস্থায় অন্তর্বর্তী সরকারকে অতি দ্রুত একটি নির্বাচন দিয়ে সরে যেতে বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশটিকে একটি নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সমঝোতা কিংবা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের অভাব...
এমন বাস্তবতায় বিএনপির উচিত নির্বাচনের জন্য সরকারকে কোনো ধরনের চাপ না দেওয়া। আর অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত যত দ্রুত সম্ভব সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থা করা, যেন এই ইস্যুতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি তো দূরের কথা, কোনো কথা বলারই সুযোগ না পায় দলটি। বিপরীত মেরুতে থাকলেও দুই পক্ষ যদি এই অবস্থানে আসতে পারে, তাহলেই দেশের জন্য মঙ্গল। সংকট অনেকাংশে কেটে যাবে।
অস্থির রাজনীতি স্থিতিশীল হবে। উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা কমবে সাধারণ মানুষের। তা না হলে অন্তর্বর্তী সরকার আর বিএনপিসহ সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে একদিন পস্তাতে হবে ভীষণভাবে। দীর্ঘ মেয়াদে চড়া মূল্য গুনতে হবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষকে।
সরকার বলছে, রাষ্ট্রের জরুরি সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচন দেওয়া হবে। কিন্তু সংস্কার আর জরুরি দুটিই আপেক্ষিক শব্দ। তা ছাড়া জরুরি সংস্কার কোনগুলো? সেসব সংস্কারকাজ শেষ করতে কত দিন সময়...
রাজধানী ঢাকায় যানজট যেন একটি চিরস্থায়ী সমস্যা। এমনিতেই এই শহরের যাতায়াতে প্রতিদিন সাধারণ মানুষকে অসীম ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হয়। এর মাঝে যখন কোনো গোষ্ঠী বা সংগঠন তাদের দাবি আদায়ের উদ্দেশ্যে রাস্তায় অবরোধ করে, তখন পুরো শহরের জীবনযাত্রা যেন থমকে যায়। প্রশ্ন হলো, এই পদ্ধতিতে আদৌ কী দাবি আদায় হয়, নাকি সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে?
এক. ঢাকার রাস্তায় প্রতিনিয়তই দেখা যায় বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন।
জাতীয় প্রেসক্লাব, সায়েন্স ল্যাব, কারওয়ান বাজার, বাংলামোটরএমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে হয় মানববন্ধন, অবস্থান কিংবা সড়ক অবরোধ। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- চাকরি জাতীয়করণ, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, পরীক্ষার ফলাফল বাতিল কিংবা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দাবি। এইসব কর্মসূচি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আয়োজিত হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের...