শিশু মায়িশা মনাওয়রা মিশু, চিঠিতে লিখে ছিল-
'মাননীয় ডিসি স্যার,
আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে বিপ্লব নামে এক লোক ইটের ভাটা দিয়েছে। ভাটার কালো ধোয়ায় আমাদের শ্বাস কষ্ট হয়। ... চোখ জ্বালা করে।
এখন আবার স্কুলের পাশে মুক্তা নামে এক লোক আরেকটা ইটভাটা দিতেছে। তাহলে আমাদের আরও কষ্ট হবে। আমরা কিভাবে বাঁচব। ...আপনি আমাদের বাঁচান।মায়িশা মনাওয়রা মিশু, দ্বিতীয় শ্রেণি, রোল-২' এবং নিচে তার বাবার নাম্বার যুক্ত করে দেয়।
এই চিঠি পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুধবার মিশুর বাসায় উপস্থিত হন। তিনি আশ্বাস দেন ইটভাটা সরিয়ে নেওয়া হবে শিগগির।
এদিকে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফোন দিয়ে মিশুর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা মমিনুল ইসলাম। তিনি গবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক।
মিশুর বাবা বলেন, আমার মেয়ের চিঠিটি ফেসবুকে অনেকেই শেয়ার করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ চিঠিটি দেখেছে। চিঠিটি দেখে আমার মোবাইল ফোনে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ফোন করে আমার মেয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।
শিক্ষার্থীর বাবা আরও জানান, নৌ প্রতিমন্ত্রী আমার মেয়ের সাথে কথা বলেছেন এবং ভাটা বন্ধ করে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
শিশু মিশু জানায়, তার স্কুলে আসার সময় ভাটার ধুলা, ছাই ও ধোয়া খুব খারাপ লাগে। চোখ জালা পোড়া করে। তাই সে এই চিঠি লিখেছে।
মিশুর চিঠির জবাবও দিয়েছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম। তিনি ফেসবুকেই সবার উদ্দেশ্যে মিশুকে নিয়ে লিখেছেন, প্রিয় দিনাজপুরবাসী, হয়বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মায়িশা মনওয়ারা মিশুর চিঠিটি আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে।
অত্যন্ত আবেগী ভাষায় লেখা চিঠিটির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা তৎপর হই। পদ্ধতিগতভাবে তথ্য সংগ্রহ করে আামরা আমাদের কর্মপন্থা ঠিক করে মিশুর আবেগের জবাবের জন্য এখন প্রস্তুত।
তিনি আরও লেখেন, কথিত ইটভাটাটি প্রতিষ্ঠাকালে আমরা অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করে তা উচ্ছেদের উদ্যোগ গ্রহণ করি। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে তা সম্ভব হয়নি। আমরা মোটিভেশনাল কার্যক্রমের মাধ্যমে মিশুর আবেগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ইটভাটাটির কার্যক্রম বন্ধে সক্ষম হয়েছি।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)