পুলিশের ভুলে সাজা ভোগ শেষে মুক্তি পেলেন রেখা

পুলিশের ভুলে সাজা ভোগ শেষে মুক্তি পেলেন রেখা

যশোর প্রতিনিধি

শিরিন বেগমের পরিবের্ত সাজা খাটা সেই রেখা খাতুনকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ এই আদেশ দেন।  

গত ২০ মার্চ তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতের আদেশে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেখা খাতুনকে মুক্তি দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

রেখা খাতুন ঝিনাইদহ শহরের শহীদ মশিউর রহমান সড়কের বাসিন্দা লাল্টু শেখের মেয়ে ও যশোর শহরের ডালমিল এলাকার ভাড়াটিয়া। শহরের চাঁচড়া ইসমাইল কলোনির শহিদুল ইসলামের সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী।  

মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত শিরিন বেগম বিদেশে। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল।

সেই পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে পুলিশ রেখাকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ কোতয়ালি থানা পুলিশ শহরের রায়পাড়া এলাকা থেকে রেখা খাতুনকে শিরিনা বেগম হিসেবে গ্রেপ্তার করে। ওই দিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। ২০০৫ সালের একটি মাদক মামলায় ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট (হেরোহিন উদ্ধার) যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া ইসমাইল কলোনি এলাকার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন বেগমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৪ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালত।

এই মামলায় শিরিন বেগমের স্বামী শহিদুল ইসলামকে খালাস পায়। শিরিন বেগম পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।  

গত ২০ মার্চ শহিদুল ইসলামের সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত রেখা খাতুন শিরিন বেগম নয়, দাবি করে ২৪ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে আবেদন করেন আইনজীবি আব্দুস সহিদ। বিচারক শুনানি শেষে বিষয়টি পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেয়। পুুলিশ সুপারের পক্ষে  তদন্ত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী।  

বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ পুলিশের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রেখা খাতুনকে মুক্তির আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেখা খাতুনের আইনজীবী আবদুস সহিদ।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানি বলেন, রেখা খাতুনকে ভুলক্রমে শিরিন বেগম হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রেখা এবং শিরিন আলাদা ব্যক্তি। শিরিন বিদেশে রয়েছে। রেখা শহিদুলের সাবেক স্ত্রী। এলাকাবাসী পুলিশকে বলেছিল, সেই (রেখা) শিরিন। পুলিশের অনিচ্ছকৃত ভুল এটি। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, আদালতের নির্দেশে সন্ধ্যায় শিরিন বেগমকে ( রেখা খাতুন) মুক্তি দেওয়া হয়েছে। একজনের পরিবের্ত আরেকজন ছিল কি না, সেটা আমরা বলতে পারব না। যেভাবে, যাকে পাঠানো হয়েছিল, তাকেই আদালতের আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
 

সম্পর্কিত খবর