ভারত ও কাশ্মীরের মধ্যে সম্পর্কও শেষ হয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি।
তিনি বলেছেন, শর্তসাপেক্ষে কাশ্মীর ভারতের অংশ হয়েছিল। জম্মু-কাশ্মীরে ৬০/৭০ শতাংশ মুসলিম। মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে না গিয়ে শর্তের ভিত্তিতে ভারতকে বেছে নিয়েছিলাম।
৩৭০ ধারা ও ৩৫-এ ধারা একটি সেতুর মতো।‘যদি আপনারা একে শেষ করে দেন তাহলে ভারত ও কাশ্মীরের মধ্যে সম্পর্কও শেষ হয়ে যাবে। ’
শুক্রবার শ্রীনগরে ইন্ডিয়া টুডে’র কন্সাল্টিং এডিটর রাজদীপ সারদেশাইকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে ওই মন্তব্য করেন পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি।
তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীর মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য।
‘যদি আপনারা ওই শর্তকে শেষ করে দেন তাহলে ভারত থেকে কাশ্মীরের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে’, হুঁশিয়ারি দেন এ নেত্রী।
বিজেপি’র সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে মেহবুবা বলেন, ‘যখন আমরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলাম তখন বলা হয়েছিল ৩৭০ ধারায় কোনও গরমিল করা হবে না। বিজেপি এতে রাজিও হয়েছিল। এসবের জন্যই আমরা বিজেপির সঙ্গে গিয়েছিলাম। ’
কাশ্মীরে আলাদা প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মেহবুবা ন্যাশনাল কনফারেন্সের সমালোচনা করে বলেন, ‘যখন নির্বাচন আসে ন্যাশনাল কনফারেন্সের তখন আলাদা প্রধানমন্ত্রীর কথা মনে পড়ে। ওরা সংখ্যাগরিষ্ঠের সরকার গড়েছিল। সে সময় ওরা আলাদা প্রধানমন্ত্রীর কথা বলেননি। শেখ আব্দুল্লাহও এ ধরণের কথা বলেননি। এক্ষেত্রে পিডিপি’র অবস্থান হল আমরা মনে করি কাশ্মীর কিছু শর্তের ভিত্তিতে ভারতের অংশ হয়েছিল এবং শর্ত যদি ভেঙে যায় তাহলে আমাদের সম্পর্কও শেষ হয়ে যাবে। ’
সম্প্রতি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ২০২০ সালের মধ্যে ৩৭০ ধারা, ৩৫-এ ধারা বাতিল করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন। বিজেপি বরাবরই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য বিশেষ মর্যাদা সম্পন্ন সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার পক্ষে সাফাই দিয়ে আসছে।
মঙ্গলবার অমিত শাহ’র উদ্দেশ্যে মেহবুবা বলেছেন, যেদিন আপনারা ৩৭০ ধারা বাতিল করবেন আপনারা কাশ্মীরে তখন কেবল দখলদারি শক্তি হিসেবে থাকবেন। যেভাবে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলদারিত্ব রয়েছে সেভাবে জম্মু-কাশ্মীরেও ভারতের দখল হবে।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও ন্যাশনাল কনফারেন্সের সহসভাপতি ওমর আব্দুল্লাহ বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর অন্য রাজ্যের মতো নয়, তারা বিনাশর্তে দেশের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা বলেছিলাম আমাদের আলাদা পরিচিতি হবে, নিজেদের ভিন্ন আইন হবে, পতাকা আলাদা হবে। আমরা সেসময় নিজেদের সদর-ই-রিয়াসাত (রাষ্ট্রপতি) এবং উজির-এ-আজমও (প্রধানমন্ত্রী) ছিলেন। ইনশাআল্লাহ্ সেসবও আমরা ফিরিয়ে আনব। ’
ওমর আব্দুল্লাহ এভাবে রাজ্যটিতে আলাদা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সাফাই দেয়ায় জাতীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একে দেশবিরোধী দাবি বলে মন্তব্য করেছেন।
অন্যদিকে, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, কোনোদিনই জম্মু-কাশ্মীরের মধ্যে আলাদা প্রধানমন্ত্রী দেখার স্বপ্ন পূর্ণ হবে না।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)