রানা প্লাজা ধসের মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনার ৬ বছর পূর্ণ হলো মঙ্গলবার। এ ঘটনা বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের নজর কেড়েছিল। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক-কর্মচারী নিহত হন। আহত হন অন্তত ২ হাজার শ্রমিক।
এদের অনেকেই সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন।২০১৩ সালের এ দিনে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকার রানা প্লাজার আট তলা ভবন ধসে পড়ে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার রাত সোয়া ১২টার দিকে জুরাইন কবরস্থানে রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিজিএমইএ’র সভাপতি রুবানা হক।
এদিকে, রানা প্লাজা ভবন ধসের ৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের মানবাধিকার সংগঠন, জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন, পরিবেশ ও উন্নয়ন ইস্যুতে কর্মরত সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে গঠিত শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
রানা প্লাজা হিসেবে পরিচিত ভবনটির মালিক সোহেল রানা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। আদালতে চলছে বিচার কাজ।
রানা সাভার পৌর যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই নয়তলা রানা প্লাজা ভবনটি। এতে ভূগর্ভস্থ তলায় গাড়ি রাখার জায়গা। দ্বিতীয় তলার বিপণিকেন্দ্রে বহু দোকান ছিল। তৃতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত পোশাক কারখানা। এর ওপরের দুটি তলা খালি ছিল। ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল প্রথম তলায়। গার্মেন্টস কারখানায় প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী কাজ করতেন। ২০০৭ সালে রানা প্লাজা নির্মাণ করার আগে জায়গাটি ছিল পরিত্যক্ত ডোবা। ভবন নির্মাণ করার আগে বালু ফেলে এটি ভরাট করা হয়।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দায়ের করা চার মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে কেবল একটির। গত ২০১৭ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলার রায় ঘোষণা করেন। বাকি তিন মামলার বিচারকাজ ঝুলে আছে। এর মধ্যে হত্যা মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে।
আর ইমরাত নির্মাণ আইনে দায়ের করা দুই মামলার মধ্যে রাজউকের মামলাটি ঢাকার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং ইমারত নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন। আরও ১১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম আদালতে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)