জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি ট্রাম্পের

সাত দশকের মার্কিন নীতি উপেক্ষা করে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা ট্রাম্পের। ছবি: এএফপি

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী বলে স্বীকৃতি ট্রাম্পের

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সকল আপত্তি উপেক্ষা করে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানের পরিবর্তে নতুন মাত্রা পেল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় গত সাত দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কোন প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। জাতিসংঘ, আরববিশ্ব ও অন্যান্য মুসলমান দেশসহ মার্কিন মিত্ররা বরাবরই এমন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে আসছিল।

যে কারণে ১৯৯৫ সালে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেওয়া হবে—এই মর্মে যুক্তরাষ্ট্রে একটি আইন পাস হলেও তা কার্যকর হয়নি। তখন থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি আদেশে সই করেন। এর মাধ্যমে এই স্থানান্তর–প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করলেন।
গতকাল বুধবার মুসলমানদের পুণ্যভূমি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি। বিশ্লেষকদের মতে, সমঝোতার ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের সুরাহা করার যে মার্কিন নীতি, তার স্পষ্ট ব্যত্যয় ট্রাম্পের এই ঘোষণা। এদিকে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প এই স্বীকৃতির ব্যাপারে নিজের দৃঢ় সংকল্পের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে সংকল্পবদ্ধ ছিলাম। কাজটা ঠিকই হয়েছে। ’ ট্রাম্প আরও বলেন, ''অতীতের অনেক প্রেসিডেন্টই বলেছিলেন যে তাঁরা এটি করতে চান (জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া)। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। তাঁরা করার সাহস পাননি, নাকি নিজেদের মতের পরিবর্তন করেছিলেন, আমি বলতে পারব না। আমি মনে করি, অনেক আগেই এটি করা উচিত ছিল। '' গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে প্রবেশের ১০ মাসের মাথায় তিনি সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করলেন তিনি। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ‘নরকের দরজা’ খুলে গেল। তারা আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের দূতকে নিজ নিজ দেশ থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মহাসচিব বলছেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ‘পৃথক দুই রাষ্ট্রের ভাবনা’র সর্বশেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে গেছে। এই ঘোষণার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও মর্যাদা হারিয়েছে। তবে ট্রাম্পের এই ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এই ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ 'সাহসী' ও 'ন্যায়-সংগত' বলে উল্লেখ করেছেন। সূত্র: এএফপি

সম্পর্কিত খবর