দোজখের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে হুজুর বেলালী!

ধর্ষক শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালী (গোল চিহ্নিত), ডানে তার কক্ষ ও ব্যবহৃত কলিংবেল।

দোজখের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে হুজুর বেলালী!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নারায়ণগঞ্জের সিরিয়াল রেপিস্ট আরিফ ও ফতুল্লার মাওলানা আল আমিনের পর এবার আরেক ভয়ঙ্কর শিশু ধর্ষকের খোঁজ মিলল নেত্রকোনার কেন্দুয়ায়। যিনি মাদ্রাসার আবাসিকে থাকা কোমলমতি শিশুদের ধর্ষণ শেষে কোরআন নিয়ে শপথ করাতেন।  

ভয় দেখিয়ে বলতেন, কাউকে বললে আল্লাহ দোজখের আগুনে পোড়াবে। আর এ ভয়ে ধর্ষিত শিশুরা কাউকে বলতো না।

শুক্রবার সকালে এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসীর হাতে আটক হন কেন্দুয়া মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল খায়ের বেলালী।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ধর্ষককে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় ওই দিনই কেন্দুয়া থানায় দুটি মামলা হয়।

এদিকে নিজের ফেসবুকে ধর্ষণের ভয়াবহ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া।

যার হুবহু তুলে ধরা হলো-
তিনি লিখেছেন, ‘কি লিখব আর কীভাবে লিখব, ভাষা পাচ্ছি না। তিনি (ধর্ষক) একজন দাওরায়ে হাদীস, (সিলেট বালুরচর কওমী মাদ্রাসা থেকে) মাওলানা, একজন বক্তা, একজন ইমাম, শুক্রবারে জুমার নামাজের খতিব। মাওলানা (!!!) আবুল খায়ের বেলালী। শুক্রবার তার বয়ান শোনার জন্য আধাঘণ্টা আগে মুসল্লীরা এসে অপেক্ষা করেন মসজিদে। কেন্দুয়ার আঠারবাড়ি এলাকায় মা হাওয়া (আ.) কওমী মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) তিনি, যে মাদ্রাসায় রয়েছে প্রায় ৩৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রী যাদের ১৫ জন আবাসিক। সেখানে তিনিও (ধর্ষক) আবাসিক। সময় সুযোগ বুঝে তিনি কলিংবেল চাপেন আর ওনার পছন্দমত একজন কোমলমতি ছাত্রীর ডাক পরে তার গা-হাত-পা টিপে দেবার জন্য। আর এক পর্যায়ে তিনি সেই অবুঝ শিশুদের উপর ঝাপিয়ে পরেন . . . . . এবং শেষে আবার কোরআন শরীফে হাত রেখে শপথ করান, কাউকে কিছু না বলার জন্য। '

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া আরো লেখেন, ‘ভয়ে কোমলমতি ছাত্রীরা কাউকে কিছু বলতো না। কিন্তু আজ এক সাহসী বীরাঙ্গনা সেই ভয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়ী হয়, বলে দেয় তার বড় বোনসহ বাড়ির সবাইকে, সেই যন্ত্রণার মুহূর্তগুলোর কথা। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক হন সেই হুজুররূপী ধর্ষক। থানায় আটক থাকা অবস্থাতেই আরো একজন শিশু শ্রেণির ছাত্রীর অভিযোগ জমা পড়ে। দুইটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে তার নামে।  

শাহজাহান মিয়া লেখেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পাই, গত একবছরে আরো মোট ৬ জন ছাত্রীর সাথে তিনি অনুরূপ কুকর্ম করেছেন যাদের সবারই বয়স ৮ থেকে ১১ এর মধ্যে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করি, সাথে সেই কলিংবেলটিও, যা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। হুজুরকে রিমান্ডে আনা হবে।

আরও পড়ুন: ‘২০ ছাত্রীকে ধর্ষণ’, দুই শিক্ষক রিমান্ডে

এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আপত্তিকর ছবি তুলে ব্লাকমেইলের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। তিনি ছাত্রীকে ধর্ষণের পর ভিডিও দেখিয়ে তার মাকেও ধর্ষণ করতেন বলে অভিযোগে জানা যায়।

সিরিয়াল রেপিস্ট আরিফ গ্রেপ্তারের পরই নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় মেলে মাওলানা আল আমিন নামে আরেক ভয়ঙ্কর ধর্ষকের সন্ধান। যিনি ওই এলাকার একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। আল আমিন ১২ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।

আরও পড়ুন: ১২ ছাত্রীকে ‘ধর্ষণ’, হুজুরের বিরুদ্ধে দুই মামলা

আরও পড়ুন: শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় ৭০ বছরের বৃদ্ধ আটক!

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর