বজ্রপাতে দুই মাসে নিহত ১২৬, বিশেষজ্ঞদের অভিমত

বজ্রপাত। প্রতীকী

বজ্রপাতে দুই মাসে নিহত ১২৬, বিশেষজ্ঞদের অভিমত

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

চলতি বছরের মে এবং জুন মাসে বজ্রপাতে ১২৬ জন নিহত হয়েছেন। ঝড়-বৃষ্টির এ দুই মাসে বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন আরও ৫৩ জন। বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলায়।

আজ শনিবার সেভ দা সোসাইটি অ্যান্ড থাণ্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গবেষণা সংস্থাটির জানায়, গত মে-জুন -দুই মাসে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন মোট ১১৮ জন। নিহতদের মধ্যে ২১ জন নারী এবং সাতজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া জুন মাসে বজ্রাঘাতে মোট ২৫ জন আহত হয়েছেন।

বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জ জেলায়।

এ জেলায় গত দুই মাসে বজ্রপাতে নিহত হয়েছে ১৬ জন।

এছাড়া, সুনামগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও সাতক্ষীরা জেলায় বজ্রপাতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

বজ্রপাত বিষয়ে গবেষণারত সংস্থাটি তাদের পর্যবেক্ষণে দেখতে পেয়েছে, খোলা মাঠে  ধান কাটার সময় সবচেয়ে বেশি বজ্রাঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এরপর বেশি ঘটেছে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় নদীতে বা বিলে মাছ ধরতে গিয়ে। মাঠে গরু আনতে গিয়ে বা  টিনের  ঘরে অবস্থানকালেও  বজ্রাঘাতে অনেক মানুষ মারা গেছে।

তাছাড়া, অজ্ঞতাবসত বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময়  বড় গাছের নিচে আশ্রয় নিয়ে অনেকে বজ্রাঘাতের শিকার হয়েছেন। এসব বড় গাছ বজ্র-বিদ্যুতকে আকর্ষণ করায় তা  বিপদের  কারণ হয়ে থাকে।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তন, আকাশে কালো মেঘের পরিমাণ ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে  সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বজ্র দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে গেছে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু  নাসের খান বলেন, লোকালয়ে যে সব উঁচু গাছ যেমন তাল, বট, কড়াই, রেন্ট্রী এসব কেটে সাফ করার ফলে আকাশের মেঘের বজ্র-বিদ্যূত এখন সড়াসড়ি বাড়ি ঘরে বা খোলা মাঠে এসে আঘাত করছে। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

তাছাড়া, বিদ্যূত ও মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলি বজ্রপাতের সময় আকাশে বিদ্যুতকে আকর্ষণ করে বলে বজ্রাঘাতে মৃত্যুও বাড়ছে।

তবে মোবাইল ফোনের  টাওয়ারের সাথে বজ্র-নিরোধক দন্ড স্থাপিত থাকার কারনে যে সব বজ্র টাওয়ারে আঘাত করে সেগুলি সড়াসড়ি মাটিতে চলে যায় বলে টাওয়ারের কোনো ক্ষতি হয় না।

এ প্রসঙ্গে, সেভ দা সোসাইটি অ্যান্ড থাণ্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম এর  গবেষণা সেলের নির্বাহী প্রধান জনাব আবদুল আলিম জানিয়েছেন, তারা কয়েকবছর আগেই সরকারকে পরামর্শ দিয়েছিল, যেন  মোবাইলফোনের টাওয়ারগুলিতে আরো শক্তিশালি বজ্র-নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়,  যাতে অন্তত: চারিদিকে এক বর্গকিলেমিটার এলাকা পর্যন্ত বজ্রপাত নিরোধ করা যায়।

তাছাড়া বিশাল একা জুড়ে খোলা ফসলের মাঠ এবং হাওর বা বিলের আশেপাশে এরকম বজ্র-নিরোধক টাওয়ার স্থাপন করে মানুষের জীবন রক্ষার উদ্যাগ নেবার দাবী জানিয়েছে  সেভ দা সোসাইটি অ্যান্ড থাণ্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর