ছাদ দেখানোর কথা বলে সায়মাকে ধর্ষণ করে হারুন

রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন। লাল গোল চিহ্নে হারুন ও ইনসেটে সায়মা।

ছাদ দেখানোর কথা বলে সায়মাকে ধর্ষণ করে হারুন

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সাত বছরের স্কুলছাত্রী সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত হারুন অর রশিদ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

জবানবন্দিতে সে জানিয়েছে, ছাদ ঘুরে দেখানোর কথা বলে ওই বাসার ৮ তলার লিফট থেকে সায়মাকে ছাদে নিয়ে যায় সে। সেখানে নবনির্মিত ৯ তলার ফ্ল্যাটে নিয়ে সায়মাকে ধর্ষণ করে। এরপর নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে থাকে সায়মা।

মৃত ভেবে সায়মার গলায় রশি দিয়ে টেনেহিঁচড়ে রান্না ঘরের সিঙ্কের নিচে রেখে পালিয়ে যান হারুন।

রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন।

তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত কুরুচির পরিচায়ক। মানবতাবিরোধী অপরাধ।

এ ধরনের অপরাধীরা সাধারণত ধর্ষণের পর যখন ভাবে এই অপকর্মের কারণে সে বাঁচতে পারবে না তখনই হত্যার মতো ঘটনা ঘটায়। এক্ষেত্রেও তাই ঘটিয়েছেন ঘাতক হারুন।

তিনি বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন মাকে বলে শিশু সায়মা ৮ তলায় যায়। সেখানে ফ্ল্যাট মালিক পারভেজের একটি বাচ্চা রয়েছে। তার সঙ্গে সায়মা প্রায়ই খেলাধুলা করতে যেতো। সায়মা ওই বাসায় গেলে পারভেজের স্ত্রী জানায় তার মেয়ে ঘুমাচ্ছে। সেখান থেকে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে লিফটে ওঠে সায়মা। সেখানেই সায়মার সঙ্গে দেখা হয় পারভেজের খালাতো ভাই হারুনের। হারুন সায়মাকে লিফট থেকে ছাদ দেখানোর প্রলোভন দেখিয়ে ছাদে নিয়ে যায়।

সেখানে অত্যন্ত পাশবিকভাবে সায়মাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। সায়মা চিৎকার করলে সায়মার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। সায়মাকে নিস্তেজ দেখে গলায় রশি লাগিয়ে টেনে নিয়ে যায় রান্নার ঘরে। সেখানে সিঙ্কের নিচে সায়মার মরদেহ রেখে পালিয়ে যায়।

এর আগে শুক্রবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যার পর থেকে সায়মার খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নবনির্মিত ভবনটির নবম তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের ভেতরে সায়মাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে রাত আটটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। ওয়ারী সিলভারডেল স্কুলের নার্সারিতে পড়তো সায়মা। তার বাবা আব্দুস সালাম নবাবপুরে ব্যবসা করেন।

আরও পড়ুন: তিন মাসেই খুনির ফাঁসি চান সায়মার বাবা

নিহত সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ‘মাগরিবের আজানের সময় আমি নামাজ আদায়ে মসজিদে যাই। মসজিদ থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যার নাশতা কিনে বাসায় আসি। বাসায় এসে দেখি সায়মা নেই। আমি, আমার স্ত্রীসহ সায়মাকে খুঁজতে শুরু করি। ছয়তলা ও আটতলায় খুঁজে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে আবার আটতলায় খুঁজতে গিয়ে রান্নাঘরে তার লাশ পাওয়া যায়। ’

এ ঘটনায় সায়মার বাবা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। মামলায় ভবন মালিকসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ।

আরও পড়ুন: সায়মা থাকত ষষ্ঠ তলায়, ‘ধর্ষক’ হারুণ আট তলায়

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর