নানা সমস্যায় জর্জিত মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের দুই জেলার যক্ষা রোগীদের জন্য নির্মিত একমাত্র টিবি ক্লিনিক। দুই জেলার প্রায় ৩০ লাখ জনগণের কথা বিবেচনা করে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হলে ক্লিনিকটি বর্তমানে বেহাল দশা। একজন মাত্র চিকিৎসক দিয়েই চলছে এই সরকারি ক্লিনিক।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৬ সালে যক্ষা রোগীদের জন্য মাদারীপুরের সৈদারবালী এলাকায় ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রায় শতবর্ষী পুরানো এই চিকিৎসা কেন্দ্রে লোকবল বাড়েনি দীর্ঘদিনেও। ক্লিনিকে চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীর ১৭টি পদ থাকলে বর্তমানে কর্মরত আছে মাত্র তিনজন।একজন চিকিৎসক, একজন ড্রাইভার ও একজন ঝাড়ুদার দিয়েই চলছে এই ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। আরো পাঁচজন কর্মচারীর পোষ্টিং এই ক্লিনিকে হলেও এরা ডেপুটিশনে অন্যত্র কর্মরত রয়েছে।
টেকনিশিয়ানও। যক্ষ রোগীদের জন্য হোম ভিজিটর পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলেও এই লোকবল নেই অনেকদিন থেকে। যক্ষা রোগীরা ওষুধ সেবন শুরু করার পর নিয়মিত ওষুধ সেবন না করলে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্রেন্স হতে পারে। এতে করে রোগী মৃত্যু ও আশপাশের সুস্থ্য মানুষের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই রোগ। যা নিরাময় যোগ্য নয়। সমাজের জন্য হুমকি স্বরূপ। এসব তদারকির জন্যই হোম ভিজিটর পদটি সৃষ্টি করা হয়। জুনিয়র কনসালটেন্ড পদটি শূন্য দীর্ঘদিন থেকে। ফার্মাসিস্ট, ল্যাব টেকনিশিয়ান, সহকারী সেবক, অফিস সহায়ক, আয়া পদেও কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। ঝাড়ুদার পদে দুজন থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছে একজন। এছাড়াও প্রায় শতবর্ষী এই চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রেটি সংস্কারের অভাবে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। পলেস্তর উঠে গেছে বিভিন্ন স্থানে। চেয়ার টেবিলগুলোও অধিকাংশ ভাঙা।
ক্লিনিকে কর্মরত একমাত্র মেডিকেল অফিসার ডা. খাজা বদরুদ্দোজা বলেন, মাথার উপরের পলেস্তর খুলে খুলে পড়ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে অনেক স্থানে। আমরা ঝুঁকির মধ্যে থেকেই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়াও এই ক্লিনিক ১৭জন কর্মকর্তা-কর্মচারী পদ থাকলেও আছে মাত্র তিনজন। এদের মধ্যে একজন ঝাড়ুদার রাতে ডিউটি করে। দিনের বেলায় থাকি আমি আর একজন ড্রাইভার। এই দুইজন দিয়ে চলছে ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা।
মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন জহিরুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, শিঘ্রই সমস্যার সমাধান করা হবে। নতুন ভবনের কাজ অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/বেলাল/তৌহিদ)