গত কয়েকদিন ধরে প্রকৃতির শিরা বেয়ে একটানা বৃষ্টি ঝরছে। দিনগুলো যেনো এক অতলান্ত অন্ধকারে ডুবে আছে। বর্ষার বৃষ্টি কী ভীষণ মায়া, কী গভীর স্পর্শ, তবুও রেবার বড় তৃষ্ণা লাগে। কী এক গভীর বেদনায় ওর শরীর দুলে ওঠে। সূর্যের মুখ দেখা না গেলেও ভ্যাপসা গরম লাগছে। রেবা গায়ের শালটা খুলে কাঠের আলনায় তুলে রাখে। হাতের কাছে রাখা শীর্ষেন্দুর শ্রেষ্ঠ গল্প বইটি চোখের সামনে মেলে ধরে। বৃষ্টিতে নিশিকান্ত - গল্পটির প্রথম লাইন কেচ্ছা কেলেংকারির মতো বৃষ্টি হচ্ছে কদিন লাইনটি পড়ে ও আকাশের দিকে তাকায়। আকাশের দিকে তাকিয়ে বৃষ্টির গতির সঙ্গে কেচ্ছা কেলেংকারির সম্পর্ক কেমন? বোঝার চেষ্টা করে। চরাচর ব্যাপি বৃষ্টির গতি কেলেংকারির মত দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। লেখক বোধহয় এমন ভাবনা হতেই এমন বাক্য লিখেছেন। লেখকের ভাবনার সঙ্গে কিছুটা যুক্ত হতে পেরে মনে মনে ও খুশি হয়। জমাট মেঘে ঢাকা...
বর্ষা-ক্ষত
পলি শাহীনা

সায়েমা চৌধুরীর ৩ কবিতা
সায়েমা চৌধুরী

আমি খনা হতে পারিনি আমি চুপ থাকি দেখেই ভেব না যে মেনে নিচ্ছি, আমার এ মৌনতাকে সম্মতি বলে ধরে নিও না তুমি; আমি চুপ থাকি কারণ - আমি খনা হতে পারিনি, সে অপেক্ষায় থেকেই আমি জিভের শক্তি বাঁচিয়ে রাখি। আমি একদিন বলতে শুরু করবো সবকিছু সব বঞ্চনার কথা; যেদিন আমার জিভ কেটে নিলেও পৃথিবীর নীল আকাশে অপ্রতিরোধ্য স্বরের প্রতিধ্বনি ভেসে যাবে আমি থেকে লক্ষ-কোটি আমরায়। প্রত্যুত্তর মেয়ে, তুমি কবিতা লিখতে যেও না, নিন্দেমন্দ শুনবে সকাল-সাঁঝেতে। মেয়ে, তুমি স্বাধীন ভাবনা ভেবো না, শক্ত শেকল জড়াবে তোমার পায়েতে। মেয়ে, তুমি পরিচয় কোন চেও না, লীন হবে তুমি কন্যা-জননী-জায়াতে। মেয়ে, তুমি স্বপ্ন বিভোর হয়ো না, ঝরবে রুধির বিন্দু বিন্দু - ললাটে। মেয়ে, তুমি সদর পেরুতে যেও না, থুবড়ে পড়বে রক্তচক্ষু কপাটে। মেয়ে, তুমি জীবন থাকতে মর না! ঘুরে দাঁড়াও, হান আঘাত, কষ পিতৃতন্ত্রে চপেটাঘাত সপাটে।...
একটি বাজি বদলে দিল জীবন
রূপক মিশ্র

বিজ্ঞানের ছাত্র তিনি। আরও স্পষ্টভাবে বললে: গণিতশাস্ত্রের। জটিল ফর্মুলা আর পরীক্ষানিরীক্ষায় মশগুল মন। পদার্থবিদ্যা আর রসায়নবিজ্ঞানের এই দুই ধারাছ্যাবলামি, ন্যাকামি, ভাবপ্রবণতার তিলার্ধ নেই যেখানে, তাদের অভিনব কাব্য বলে মনে করেন। তাই বলে সাহিত্য দুয়োরানি? মোটেও নয়। বারো-তেরো বছর বয়স থেকেই লুকিয়ে-চুরিয়ে নভেল পড়ার নেশা। শেষ করে ফেলেছেন গোরা, বিষবৃক্ষের মতো উপন্যাস। তবু গ্রন্থপাঠ স্রেফ হাল্কা বিনোদন আর সস্তা ভাবালুতা জাগায় না। এক একটি বই শেষ করেন। আর তার নির্যাস যতক্ষণ পর্যন্ত না শরীরের অস্থি-মজ্জা-রক্ত-স্নায়ু বেয়ে মনের অতলে সেঁধিয়ে যাচ্ছে, ততক্ষণ অস্থির হয়ে থাকেন। শান্ত হন না কিছুতেই। ঘুরে বেড়ান, ছুটে চলেন মাঠ-প্রান্তর-নদীতীর। আর খুঁজে চলেন একটাই উত্তর: কেন? স্কুল, কলেজ পেরিয়ে বাকি জীবনেও এই একটিমাত্র মানসিক রোগ, সবকিছুর ভেতরে কেন-র উত্তর খোঁজার...
প্রথম ছেলের জন্ম ও মৃত্যুর সময় হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন নিশ্চুপ
গুলকেতিন খান

বিয়ের পর আমি হলিক্রস কলেজে ভর্তি হই। প্রথম বর্ষের শেষের দিকে বুঝতে পারি যে আমি conceive করেছি ( মা হতে যাচ্ছি)। আমাদের প্রথম কন্যা নোভার জন্মের পর এইচ এসসি( তখন ইন্টারমিডিয়েট বলা হতো) পরীক্ষার এক/দেড় মাস আগে নোভাকে নিয়ে Americaতে রওনা দেই (তবে হুমায়ূন আহমেদের লেখা হোটেল গ্রেভার ইন এ যে লিখেছিলেন তাঁর লেখা চিঠি পড়ে আমি কাঁদতে কাঁদতে America রওনা হয়েছিলাম, সেটা সত্যি ছিলো না)সবাইকে চিঠি লিখেও যখন আমি Americaতে যেতে রাজি হইনি তখন আমার দাদা, প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁকে একটি চিঠি লিখেন তিনি। চিঠিতে কী লেখা ছিলো জানিনা তবে দাদা আমাকে কাছে ডেকে মাথায় হাত রেখে বলেন,বিদেশ ভ্রমনও শিক্ষার একটি বড় অংশ। দাদার চোখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলার সাহস আমার ছিলো না! যাইহোক ব্যাক্তিগত কারণে আমি পরীক্ষার এক মাস আগে America চলে যাই। হুমায়ূন আহমেদের PhD এর পর এক বছর Post doctoral Fellowship করে আমাদের দেশে ফেরার কথা...
সর্বশেষ
সর্বাধিক পঠিত
সম্পর্কিত খবর