মাদারীপুর জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে নেই ডেঙ্গুজ্বর শনাক্ত করার যথাযথ ব্যবস্থা। রোগীদের অভিযোগ প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেও সরকারি হাসপাতাল থেকে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না তারা।
গত ৫ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। যার মধ্যে গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছে ১০ জন।
এদের মধ্যে মাদারীপুরের নিজ এলাকা থেকে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন দুজন বাসিন্দা। ফলে জনমনে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ জনই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে মাদারীপুরে এসেছে বলে দাবি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষের।সরেজমিনে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, সদর হাসপাতালের সাধারণ রোগীদের সাথেই রাখা হয়েছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের।
করার কেউ না থাকায় চলে আসে গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কেন্দুয়াতে। পরে সদর হাসপাতালে এসে জানতে পারেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। এছাড়াও ডাসার থানার ধুয়াসার গ্রামের মোসলেম কবিরাজও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। তিনি এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা। বাড়িতে থাকতেই আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গু জ্বরে। সদর হাসপাতালে ভর্তির পরই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হচ্ছে ঢাকা অথবা ফরিদপুর।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত প্রিয়াঙ্কা আক্তার জানান, ‘কয়েকদির ধরে জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। পরে জানতে পারেন এটা ডেঙ্গু জ্বর। মাদারীপুর সদর হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা না থাকায় আমাকে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। একটি সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা নেই। এটা খুবই দুঃখজনক। ’
আরেক রোগী মাদারীপুর সদর উপজেলা আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি কখনও ঢাকায় যাননি। হঠাৎ করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কিন্তু এখানে চিকিৎসা সেবা না থাকা আমাকে ঢাকা অথবা ফরিদপুর নিয়ে যেতে বলেছে। এখানে যদি যথাযথ চিকিৎসা থাকতো তাহলে অন্যত্র যেতে হতো না। ’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ জানান, গত ৫ জুলাই থেকে এই হাসপাতালে মোট ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। যাদের মধ্যে গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছে ১০ জন। এছাড়া গেলো ২৪ ঘন্টায় আরো ৩ জন ভর্তি হয়েছে। যাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি। আমাদের সাধ্য মতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ’
মাদারীপুরের সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সরকারি হাসপাতাগুলোতে ডেঙ্গু জ্বর সনাক্ত করণের কীট নেই। যে কারণে ডেঙ্গু সনাক্ত করে রোগীরা আসলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। যদি কোনো রোগীর অবস্থার অবনতি হয়, তাহলে উন্নত চিকিৎসার জন্যে অন্যত্র রেফার করি। আমরা আগামী বছর ডেঙ্গু সনাক্তকরণ কীট ক্রয়ের জন্যে অর্থ বরাদ্দ চাইব। ’
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/বেলাল/তৌহিদ)