মহিউদ্দিনের অবর্তমানে কে ধরবেন চট্টগ্রাম আ.লীগের হাল

না ফেরার দেশে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী (ইনসেটে)

মহিউদ্দিনের অবর্তমানে কে ধরবেন চট্টগ্রাম আ.লীগের হাল

রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম

লাখো মানুষকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তার মৃত্যুতে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে একটি প্রশ্ন নানাভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে- কী হবে এখন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের? কে ধরবেন অভিভাবক হিসেবে নেতৃত্বের হাল? বর্ষীয়ান নেতা, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গোটা চট্টগ্রাম জুড়েই এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মাঝে। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর মধ্যেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন-আলোচনা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করছেন, গেল টানা প্রায় চারদশক ধরে চট্টগ্রাম মহানগরীর রাজনীতিতে শীর্ষ নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী।

তাঁর প্রয়াণে শুধু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নয়, বিএনপিসহ অন্য বড় দলগুলোর নেতাকর্মীদের মাঝেও দেখা দিয়েছে শূন্যতা।

চট্টগ্রামের রাজনীতিতে তৃণমূল থেকে ওঠে আসা নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে মাঠের রাজনীতিতে মুখোমুখি হলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ছিল বিএনপির শীর্ষ নেতা, সাবেক মন্ত্রী আবদুল­াহ-আল নোমানের। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোতোয়ালী আসন থেকে এই দুই নেতা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোকাহত নোমান ঢাকা হতে ছুটে যান চট্টগ্রামে।

এ প্রয়াণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে শূন্যতা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক মন্ত্রী নোমান বলেন, ‘এমনিতেই বিভিন্ন দলে গণমুখী নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। মহিউদ্দিন চৌধুরী দলীয় সীমারেখা ছাড়িয়ে চট্টগ্রামের ও জাতীয় স্বার্থে রাজনীতিতে উচ্চকণ্ঠ হতে দ্বিধাবোধ করেননি। এমন নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ হবার নয়।


নোমান আরো বলেন, ‘লোভ লালসাহীন সারাজীবন ত্যাগের রাজনীতি করে মহিউদ্দিন চৌধুরী তার সর্বজন গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে গেছেন। ’

অন্যদিকে দলের মহানগর সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর প্রয়াণে যে শূন্যতা তাতে হাল ধরছেন কে?-এমন প্রশ্নে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘প্রবীণ নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর শূন্যতা কখনো পূরণ হবার নয়। তার প্রয়াণে একটি যুগের, একটি কালের অবসান ঘটলো। জনসম্পৃক্ততা বজায় রেখে মহিউদ্দিন চৌধুরী যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি তুলে ধরেছিলেন তার অনুপস্থিতিতে আমরা চেষ্টা করবো দল ও সরকারের সুনাম বজায় রেখে মাঠে কাজ করতে। এখন প্রত্যেক নেতাকর্মীরই এমন তাগিদ হওয়া উচিত বলে মনে করেন নুরুল ইসলাম বিএসসি। ’

উল্লে­খ্য, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে সর্বশেষ মহানগর আওয়ামী লীগের ঘোষিত কমিটিতে সভাপতি পুনঃনির্বাচিত হন সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক হন বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এ দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সাম্প্রতিক নানা ইস্যুতে বিভক্তি প্রকাশ্য হলেও মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চিকিৎসার্থে সিঙ্গাপুর প্রেরণ থেকে শুরু করে সর্বশেষ গতকাল শেষ বিদায় পর্যন্ত মহউদ্দিনের পাশে ছিলেন নাছির।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিদায়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সর্বশেষ বর্ষীয়ান জনমুখী নেতৃত্বের বিদায় ঘটলো।

সম্পর্কিত খবর