নিউইয়র্কে জেবিবিএর পথমেলায় সম্প্রীতির জয়গান

নিউইয়র্কে জেবিবিএর পথমেলায় সম্প্রীতির জয়গান

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক 

হাজার হাজার প্রবাসীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশের কিংবদন্তি তারকা শিল্পীদের গানের আমেজে ঐক্যবদ্ধ হলো জেবিবিএ (জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশন)।  

উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশিদের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ২৫ আগস্ট রোববার অনুষ্ঠিত পথমেলাটি পরিণত হলো কমিউনিটির মেলবন্ধনের অপূর্ব এক সমাবেশে।  

দু’বছরেরও অধিক সময় যাবত বিভক্ত জেবিবিএর কর্মকর্তারা একসাথে মঞ্চে উঠে বিপুল করতালির মধ্যে ঐক্যের ঘোষণা দিলেন। আর এর মধ্যদিয়েই বহুজাতিক এই সিটিতে প্রবাসীদের এগিয়ে চলার পথ সুসংহত হলো বলে এই মেলায় উপস্থিত স্টেট সিনেটর, স্টেট এ্যাসেম্বলিম্যান, সিটি কাউন্সিলম্যান এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডাররা মন্তব্য করেন।

‘নানাবিধ কারণে অভিবাসী সমাজে হতাশা বিরাজ করছে, চরম এক আতংকে দিনাতিপাত করছে অভিবাসনের মর্যাদাহীনরা। এ অবস্থায় ঐক্যের বিকল্প নেই। জেবিবিএর মত একটি বড় সংগঠনের অনৈক্য দূর হবার সুফল প্রকারান্তরে সাধারণ প্রবাসীরাই পাবেন’-উল্লেখ করেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার ও ইউএস সুপ্রিম কোর্টের এটর্নি মঈন চৌধুরী।  

ঐক্যের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম এবং কামরুজ্জামান কামরুলের নেতৃত্বাধীন কমিটি এখন আরো জোরালোভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করতে সক্ষম হবেন।

এই কমিটির সাথে একিভূত হলো শাহনেওয়াজ ও মাহাবুবুর রহমান টুকুর নেতৃত্বাধীন জেবিবিএ। শাহনেওয়াজ পথমেলা মঞ্চে উঠে অনৈক্য ভুলে যাবার ঘোষণা প্রদানের সময় জেবিবিএর সর্বস্তরের নেতারাও সেখানে ছিলেন। ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয় করেন হারুন ভূইয়া এবং ফাহাদ সোলায়মান।  

জেবিবিএর এ পুনর্মিলনী সমাবেশ তথা পথমেলায় জেগে উঠা বাঙালিদের প্রাণের কথামালায় সাজানো সঙ্গীতে অংশ নেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কন্ঠশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদি, একুশে পদকপ্রাপ্ত কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, কন্ঠযোদ্ধা শহীদ হাসান, কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, শাহ মাহবুব, কৃষ্ণাতিথির মত বরেণ্য শিল্পীরা। বিনা টিকিটের এই মেলায় খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় আপ্লুত প্রবাসীরা ঘরে ফিরেছেন পছন্দের কেনাকাটাসহ ঐক্যের প্রক্রিয়ায় শরিক হবার প্রচন্ড সন্তুষ্টিসহ।  

উল্লেখ্য, এটি ছিল জেবিবিএর দ্বাদশতম পথমেলা। আর এই মেলাতেই দেশবরেণ্য শিল্পীদের এই সমাগমের জন্যে সকলে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেবিবিএর সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদসহ মেলা কমিটির সর্বস্তরের কর্মকর্তাদেরকে। কারণ, শত ডলারের টিকিট ক্রয় করেও একইমে এতগুলো শিল্পীর দেখা খুব কম সময়েই পেয়েছেন প্রবাসীরা।  

এ মেলায় শুভেচচ্ছা জানাতে এসেছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, স্টেট এ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যটালিনা ক্রুজ, সিটি কাউন্সিলম্যান ডোনাভান জে রিচার্ডস, মূলধারায় জনপ্রিয় সংগঠক মাজেদা এ উদ্দিন, স্থানীয় পুলিশ প্রেসিঙ্কটের কমিনিটি এ্যাফেয়ার্স অফিসার মারিয়ো এবং বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সেক্রেটারি ফখরুল আলম।  

পুরো আয়োজন সূচারুরুপে পরিচালনা-সমন্বয়ে ছিলেন মেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারি ফাহাদ সোলায়মান এবং সদস্য-সচিব মোহাম্মদ আলম নমী, যুগ্ম সদস্য-সচিব বিপ্লব সাহা, কামরুজ্জামান বাচ্চু, শাহজাদা ইলিয়াস, যুগ্ম আহবায়ক নূরল আমিন বাবু, কোষাধ্যক্ষ সেলিম হারুন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।  

অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন মেলা কমিটির কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন এবং রুহুল আমিন সরকার। স্থানীয় শিল্পীদের মধ্যে নাচ ও গানে আরো ছিলেন রোকসানা মির্জা, কামরুজ্জামান বকুল, শায়রা রেজা, জেরিন খান, সিমরান খান, ড. নীলা এবং শিশুশিল্পী শৌভিত চৌধুরী।  

মেলামঞ্চে উঠে প্রবাসীদের ঐক্যের বন্ধনে জেগে উঠার জন্যে অভিনন্দন জানান বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ। মেলায় এসেছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার আব্দুর রহিম হাওলাদার, সোসাইটির নির্বাচনে সেক্রেটারি প্রার্থী ও কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার মোহাম্মদ আলী।  

সাড়ে ২৭ হাজার ভোটারের সমন্বয়ে বাংলাদেশ সোসাইটির আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী কাজী নয়নও ছিলেন সরব। স্থানীয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা এটর্নি মঈন চৌধুরী এক পর্যায়ে বেবী নাজনীনের গানের সাথে মঞ্চে উঠে কন্ঠ মিলিয়েছেন। আর এভাবেই পুরো এলাকা প্রাণে প্রাণে একাকার হয়ে যায় ঐক্যের বন্ধনে।  

মেলায় বিপুলভাবে সাড়া দেয়ায় প্রবাসীদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন জেবিবিএর সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুল, মেলা কমিটির আহ্বায়ক হারুন ভূইয়া এবং সদস্য-সচিব মো. নমী। প্রবাসের সবচেয়ে বড় ও জমজমাট এ মেলায় মিডিয়া পার্টনার ছিল চ্যানেল আই এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন ও সাপ্তাহিক ঠিকানা।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)

সম্পর্কিত খবর