তাজিয়া মিছিলে পাইক নিষিদ্ধ

ছবি সংগৃহীত

তাজিয়া মিছিলে পাইক নিষিদ্ধ

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া শোক মিছিলে পাইক অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সেই সঙ্গে তাজিয়া শোক মিছিলে ডিএমপির পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

আজ বুধবার ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে এক সমন্বয় সভায় এ কথা জানান ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

এ সময় সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সভা সূত্র জানায়, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর ৭ মহরম দুপুর ২টায় আঞ্জুমানে হায়দারীর আয়োজনে হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে শোক মিছিলের মধ্যদিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পবিত্র আশুরা উদযাপন শুরু হবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১০ সেপ্টেম্বর আশুরা পালন শেষ হবে।

ওই সমন্বয় সভায় আশুরার শোকমিছিল আয়োজক কর্তৃপক্ষের প্রতি ১৩টি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

১।

শোক মিছিলের নির্ধারিত রুট ও সময়সীমা (নির্ধারিত সময়ে শুরু ও শেষ) মেনে চলতে হবে।

২। তাজিয়া শোক মিছিলে কোনো পাইক যাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়টি আয়োজক সংস্থা নিশ্চিত করবেন। (তাজিয়া মিছিলে ‘হায় হোসেন’ মাতম তুলে যারা দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি নিয়ে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করেন তাদের ‘পাইক’ বলা হয়। )

৩। তাজিয়া শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের নিশানের উচ্চতা ১২ ফুটের বেশি হবে না।

৪। তাজিয়া শোক মিছিল ও অন্যান্য অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আয়োজক সংস্থা প্রতিটি সমবেত স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করবেন।

৫। আয়োজক সংস্থা পর্যাপ্ত সংখ্যক আইডি কার্ডসহ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ছবিসহ তালিকা সংশ্লিষ্ট উপ-পুলিশ কমিশনারের অফিসে প্রেরণ করবেন।

৬। তাজিয়া শোক মিছিলে সব ধরনের ধারালো অস্ত্র, ধাতব পদার্থ, দাহ্য পদার্থ, ব্যাগ, পোটলা, লাঠি, ছোরা, চাকু, তরবারি/তলোয়ার, বর্শা, বল্লব এবং আতশবাজির ব্যবহার নিষিদ্ধ। পোশাকের সঙ্গেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।

৭। শোক মিছিল চলাকালীন রাস্তার মাঝে বিভিন্ন অলিগলি থেকে আসা লোকদের মিছিলে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। মিছিলে অংশগ্রহণ করতে হলে মিছিল শুরুর স্থানে যেতে হবে।

৮। শোক মিছিল শুরুর স্থানে প্রবেশের আগে সবাইকে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর ও হাত দিয়ে দেহ তল্লাশি করে ঢুকতে দিতে হবে। তল্লাশি ব্যতীত কোনো অবস্থায় কাউকে মিছিলে ঢুকতে দেয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী রাখতে হবে।

৯। শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইমামবাড়া ও শোক মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সমাবেত স্থান ও এর আশপাশের সমস্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। সন্ধ্যার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

১০। শোক মিছিলে উচ্চমাত্রার শব্দ তৈরি করার ঢাক-ঢোল, বাদ্য যন্ত্র, পিএ সেট ব্যবহার করা যাবে না।

১১। শোক মিছিল চলাকালীন মিছিলের মধ্যে কোনো গ্যাপ সৃষ্টি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

১২। তাজিয়া মিছিলে পাঞ্জা মেলানোর সময় শক্তি প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা তৈরি করা যাবে না।

১৩। শোক মিছিল ও আশুরা কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানে কাউকে চাদর গায়ে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল)