রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফেরে অন্য এক আকায়েদ!

ঢাকায় যে বাড়িতে (ডানে) উঠেছিলেন আকায়েদ (ইনসেটে)।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফেরে অন্য এক আকায়েদ!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের জনাকীর্ণ সাবওয়ে স্টেশনে পাইপ বোমা দিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে আটক হন বাংলাদেশি আকায়েদ। কিন্তু, জীবিকার তাগিদে বিদেশে পাড়ি জমানো নিরীহ ছেলেটি হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন- এই প্রশ্ন তার স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার। বাংলাদেশে আকায়েদের নামে কোন অভিযোগ বা জঙ্গি সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়নি পুলিশ। তবে কিছু বিষয় যে আকায়েদের মনকে পরিবর্তন করে দিয়েছিল সে ব্যাপারে অনেকটাই এখন নিশ্চিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে একাকী সফর করেন আকায়েদ। যান রোহিঙ্গা শিবিরে। সেখানে তিনি কিছু ওষুধও বিতরণ করেন। ওই সময়ে আকায়েদ মসজিদে এবং গাছের নিচেও ঘুমিয়েছেন।

কেন তিনি একাকী এই সফর করেন তা এখনো রহস্যে ঢাকা।  

জানা গেছে, ঢাকায় আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেখতে যান।  

আকায়েদের শাশুড়ি বলেন, যাওয়ার সময় সে বেশ হাসিখুশি ছিল। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবির থেকে ফিরে আসার পর সে খুব হতাশ ছিল। সে বলেছিল ওই মানুষগুলো (রোহিঙ্গারা) প্রতি মুহূর্তে নরকে বাস করছে।

আমেরিকার তদন্তকর্মকর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনে ফেরার কয়েক সপ্তাহ পর আকায়েদ (২৭) বোমা বানানো শুরু করে। ১১ ডিসেম্বর সেটির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আহত এবং ঘটনাস্থলেই আটক হয়।

জঙ্গি গোষ্ঠীর সাবেক সদস্য হাসান রফিক। এখন কাজ করছেন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেছেন, যে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আকায়েদ গিয়েছিল সেখানে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সদস্য সংগ্রহ করছে। শিবিরের কেউ আকায়েদকে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে উদ্ধুদ্ধ করেছে। তাকেই এখন খুঁজে বের করতে হবে।

জানা গেছে, আকায়েদ হাসপাতালের বিছানায় থেকে তদন্তকারীদের সহযোগিতা করছেন। জানিয়েছেন অনেক কিছু। তিনি অনলাইনে ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।  মুসলিম বিশ্বের প্রতি আমেরিকার নীতি তাকে ক্ষেপিয়ে তুলেছিল।

বাংলাদেশ ও আমেরিকা দুই দেশেরই তদন্তকারীরা বলছেন, আকায়েদ উল্লাহ বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় পা দেওয়ার সময় কোন জিহাদী ছিল না। তবে ২০১১ সালে আমেরিকায় যাওয়ার পর সে বিচ্ছিন্নতার দিকে চলে যায়, এবং জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তার আগে জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি তার কোন আগ্রহ দেখা যায়নি।

ঠিক কখন থেকে কীভাবে আকায়েদ জঙ্গিবাদে ঝুঁকে পড়ে তা খুঁজতে মাঠে নেমেছে তদন্তকারীরা। বাংলাদেশ পুলিশও এই ঘটনার তদন্তে ১৫ কর্মকর্তাকে নিয়োগ করেছে।

আকায়েদের একাকী বাংলাদেশ সফর ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাওয়ার বিষয়টি তদন্তকারীদের ভাবিয়ে তুলেছে।

(নিউ ইয়র্ক টাইমস থেকে আংশিক অনূদিত)

সম্পর্কিত খবর