সুদের টাকা না পেয়ে হামলায় নারীর পেটের বাচ্চার মৃত্যু

মাদারীপুর

সুদের টাকা না পেয়ে হামলায় নারীর পেটের বাচ্চার মৃত্যু

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর উকিল বাড়ী এলাকায় শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় জিতু আক্তার (২৫) এক গর্ভবর্তী নারীর পেটে থাকা বাচ্চার মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার মস্তফাপুর উকিল বাড়ী এলাকার শাজাহান হাওলাদারের ছেলে রাজু হাওলাদার (৩০) তার চাচাতো ভাই জহির হাওলাদারের (৩৫) কাছে একটি মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে লাভ দেওয়ার কথা বলে টাকা ধার নেয়। কিছুদিন পরে রাজু বন্ধক রাখার মূল টাকা জমা দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে নেয়। কিন্তু লাভের টাকা দেয়নি।

এই লাভের টাকা নিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে জহির হাওলাদার লোকজন নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ রাজুর বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় রাজুর মা সাফিয়া বেগম (৫৩), স্ত্রী গর্ভবর্তী জিতু আক্তার (২৫), ছোট ভাই জসিম হাওলাদার (২৪), নাছিম হাওলাদার (২০) আহত হয়। এদের মধ্যে সাফিয়া বেগমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে
উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জসিম ও নাছিম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলায় গুরুতর আহত গর্ভবর্তী জিতু আক্তারকে শহরের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে রাতে সিজার অপারেশন করা হয়। এ সময় তার গর্ভে থাকা নবজাতকের মৃত সিজার অপারেশন হয়।

রাজু হাওলাদার বলেন, আমার চাচাতো ভাই জহিরের কাছে মোটরসাইকেল রেখে টাকা ধার নেই। আমি মূল টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল ছাড়িয়ে নিয়ে আসি কিন্তু লাভের টাকাটা দেওয়া হয়নি। লাভের টাকার জন্যই জহির রাতে লোকজন নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে গর্ভবর্তী স্ত্রী, মা ও ভাইদের মারধর করে গুরুতর আহত করে। আহত সবাইকে রাতে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় হয়। হামলায় আমার স্ত্রীর গর্ভে থাকা সন্তান মারা যায়। আমি হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জহির হাওলাদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি এবং মোবাইলেও পাওয়া যায়নি।

প্রত্যাশা প্রাইভেট হাসপাতালের ডা. এলিজা বলেন, আমরা রাতে অপারেশন করে দেখি শিশুটি মারা গেছে। গর্ভবর্তী এ নারীর পেটে গুরুতর আঘাত লাগার ফলে গর্ভে থাকা অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমি সদর হাসপাতালে ও প্রত্যাশা প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথে কথা বলে এসেছি। গর্ভবর্তী নারী আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় শিশুটি পেটেই মারা যায়। থানায় অভিযোগ দিলেই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)