রাবি উপ-উপাচার্যের ফোনালাপ ফাঁস, ‌‌‘তুমি কত টাকা দিতে রেডি’

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফাঁস হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের ফোনালাপ। সেই ফোনালাপে তিনি আইন বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ দিতে এক চাকরিপ্রত্যাশির স্ত্রীর সঙ্গে টাকা নিয়ে দেন-দরবার করছেন। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে তোলপাড় চলছে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি পেশার জন্য অমর্যাদাকর।

পদে থাকার নৈতিক অধিকারও হারিয়েছেন বলে মনে করেন তারা।

আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধি জানান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে সম্প্রতি। চাকরিপ্রত্যাশির স্ত্রীর সঙ্গে উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার আর্থিক লেনদেনের বিষয়ের সেই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর ক্যাম্পাসজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ফোনালাপের চুম্বক অংশ নিউজ টোয়েন্টিফোরের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

রাবি উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া: তুমি কত টাকা দেওয়ার জন্য রেডি (প্রস্তুত) হইছ?

চাকরিপ্রত্যাশির স্ত্রী: আসলে স্যার সত্যি কথা বলতে...।

রাবি উপ-উপাচার্য: না না, সত্যি কথাই তো বলবে। উপরে আল্লাহ তায়ালা নিচে আমি।

চাকরিপ্রত্যাশির স্ত্রী: অবশ্যই।

ফোনালাপে টাকা নিয়ে উপ-উপাচার্যের দেন-দরবারকে লজ্জাজনক এবং পেশার জন্য অমর্যাদাকর উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাছনাত আলী বলেন, এ ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যকে আহত করেছে। লজ্জিত করেছে। সমাজে আমাদের মর্যাদা ভুলন্ঠিত হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান জানান, শিক্ষক হিসেবে এর থেকে বড় লজ্জা আর কী হতে পারে।

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক, মোর্শেদুল আলম ওই শিক্ষকের পদত্যাদের দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা আজ তার পদত্যাগের দাবিতে সমবেত হয়েছিলাম।

রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আবদুল মজিদ অন্তর বলেন, যেহেতু তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছেন। সেহেতু তিনি আর ওই চেয়ারে থাকার যোগ্যতা রাখেন না। তার পদত্যাগ করতে হবে।

এদিকে রাবি উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলছেন। তিনি নৈতিকতা হারাননি দাবি করে বলেন, নো দাইসেল্ফ। আমি আমাকে চিনি। আমি কী। আমার অনেষ্টিই হচ্ছে আমার শক্তি। আমার সততাই আমাকে বেগবান করেছে।

উল্লেখ্য, আইন বিভাগে নিয়োগ পেয়েছেন- উপ-উপাচার্য চৌধুরী মো. জাকারিয়ার জামাই, আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর মেয়েসহ তিনজন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)