‌‌হত্যার ৩৬ ঘণ্টা পর ভিসি বললেন সব দাবি মেনে নিচ্ছি

অনলাইন ডেস্ক

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর শিক্ষার্থীদের সামনে এসে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বললেন, তোমরা যা দাবি দিয়েছ তোমাদের দাবির সঙ্গে অ্যাগ্রি করছি।

তবে ঠিক কোন দাবিগুলো মানা হলো তা জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে চলে যেতে চান।

আমরা নীতিগতভাবে সব দাবি মেনে নিচ্ছি উল্লেখ করে ভিসি বলেন, আমি সারাদিন মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, মিটিং করেছি। এগুলো না করলে দাবিগুলোর সমাধান হবে কীভাবে।

সব তো আমার হাতে নেই।

শিক্ষার্থীদের আলাদা ডেকে নিয়ে কথা বলার প্রস্তাব দিলে উপাচার্যের সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। পরে ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দেন আন্দোলনরতরা।

উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ।

এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার মরদেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭ তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

গতকাল সোমবার আবরার হত্যার প্রতিবাদে দিনভরই উত্তপ্ত ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। গতকাল দুপুর থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা হলের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণ করা রোববার রাতের ফুটেজ দেখানোর এবং দোষী ব্যক্তিদের নাম প্রকাশের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এ ঘটনায় ১৪ জন জড়িত বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায়।

এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা চকবাজার থানায় সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। পাশাপাশি গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটিও।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় বুয়েট শাখার সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তাকে মারধরের সময় ২০১১ নম্বর কক্ষে উপস্থিত ছিলেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)