বাগেরহাট-হবিগঞ্জ-লক্ষ্মীপুরে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৬

বাগেরহাট-হবিগঞ্জ-লক্ষ্মীপুরে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ৬

অনলাইন ডেস্ক
দেশের ‍তিন জেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তিনটি বন্দুকযুদ্ধই হয়েছে মঙ্গলবার ভোরের দিকে। এর মধ্যে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে বাগেরহাট ও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে। বাগেরহাটে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন চার বনদস্যু।
আর শায়েস্তাগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন এক ডাকাত। এছাড়া লক্ষ্মীপুরে ডাকাতদলের দুই পক্ষে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। খুলনা প্রতিনিধি জানান খুলনার কয়রা এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন, যারা বনদস্যু বলে দাবি করছে পুলিশের এলিট ফোর্সটি। নিহতদের মধ্যে দস্যুবাহিনী প্রধান আমিনুল রয়েছেন।
আহত হয়েছেন র‌্যাবের দুই সদস্য। সোমবার দিবাগত রাতে কয়রা উপজেলার সুন্দরবনে এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ঘটে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সৈয়দ মোহাম্মদ নূরুস সালেহীন ইউসুফ পিএসসি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সরকার দস্যুমুক্ত ঘোষণার পরও সুন্দরব‌নে দুই-এক‌টি ছোটবা‌হিনী ডাকা‌তির জন্য সংগ‌ঠিত হ‌য়ে‌ছে। এদের ধরতে র‌্যাবের গো‌য়েন্দা নজরদা‌রি জোরা‌ল করা হয়। এরই প্রে‌ক্ষি‌তে সোমবার গভীর রা‌তে কয়রা এলাকায় অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়। বনের এক‌টি খা‌লের কা‌ছে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পে‌য়ে দস্যুরা গু‌লি চালায়। র‌্যাবের অভিযানিক দলও পাল্টা গু‌লি চালায়। ক‌য়েক ঘণ্টা বন্দুকযু‌দ্ধের পর ঘটনাস্থল থে‌কে বা‌হিনী প্রধান আমিনুরসহ চারজ‌ন দস্যু‌কে গুলি‌বিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের কয়রা উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে নেয়া হ‌লে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা ক‌রে‌ন। সেখান থে‌কে বেশ ক‌য়েক‌টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হ‌য়ে‌ছে। এ ঘটনায় র‌্যাবের দুইজন সদস্য আহত হ‌য়ে‌ছেন। র‌্যাবের মেজর শামীম সরকার এএস‌পি তোফাজ্জল ‌হো‌সেনসহ এক‌টি অভিযানিক দল এ অ‌ভিযান চালায়। লাশ চারটি কয়রা উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে নেয়া হ‌য়ে‌ছে। আহত র‌্যাবের দুইজন সদস্য‌কে প্রাথ‌মিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী লাদিয়া গ্রামের পাশে বাঁশবাগান এলাকায় ভোরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কুদরত আলী নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন, যিনি ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি। নিহত কুদরত আলী হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের দরিয়াপুর গ্রামের উমর আলীর ছেলে। এ ঘটনায় হবিগঞ্জ ডিবি’র দুই এসআইসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দুটি রামদা ও কয়েকটি রড উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, কুদরত আলীসহ ১০/১২ জন ডাকাত ওই স্থানে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মানিকুল ইসলাম ও শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হকসহ পুলিশ সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করেন। পুলিশকে দেখে ডাকাতরা গুলি ছোঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ডাকাত কুদরত। বন্দুকযুদ্ধ চলাকালে হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ ও মোজাম্মেল হক, কনস্টেবল রনি কর, জয়নুল হক, নুরুল ইসলাম, রিপন আহত হন। তারা হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। শায়েস্তাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, বন্দুকযুদ্ধে নিহত কুদরতের বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। সে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। দুপুরে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানাবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। লক্ষ্মীপুর লক্ষ্মীপুরে ডাকাত দলের দুই পক্ষে গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বন্দুক, দুই রাউন্ড গুলি ও পাঁচটি গুলির খোসা এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার দত্তপাড়ার বকুলতলা এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়ার সময় দুই দল ডাকাতের মধ্যে গোলাগুলি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, ডাকাতদের দুই পক্ষের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময় গুলিতে এক ডাকাত নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে নিহত ডাকাতের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।