রায় নিয়ে নুসরাতের বাবার বক্তব্য

রায় নিয়ে নুসরাতের বাবার বক্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন নুসরাতের বাবা এ কে এম মুসা।

তিনি আদালত চত্বরে বলেন, মামলার সব আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী, প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা রায়ে সুবিচার পেয়েছি। যত ক্ষমতাশালী হোক না কেন এমন রায় থেকে মানুষ শিক্ষা নেবে যাতে আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।

তিনি আরও বলেন, মামলার সব আসামির ফাঁসির আদেশ দেওয়ায় নুসরাতের আত্মা শান্তি পাবে। পাশাপাশি নিজের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন নুসরাতের বাবা।

এর আগে রাফির ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, 'রায়ের মধ্য দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো, আর কোনো বোনকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রাণ দিতে না হয়। সব বোন যেন এমন প্রতিবাদী থাকেন সবসময়।

'

তিনি বলেন, বোনকে হত্যার পর এখনও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন হত্যাকারীরা। আদালত চত্বরেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকবার। গত ৩০ মে মামলার হাজিরা দিতে পুলিশি হেফাজতে আসামিদের তোলা হয় আদালতে। সেখানেই মামলার বাদী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ও পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকনকে হুমকি দেন তারা।

ওইদিন গণমাধ্যমকে নোমান বলেন, 'মামলার আসামি ও তাদের আত্মীয়-স্বজনরা আদালতে প্রশাসনের সামনে আমাকে, আমার পরিবার ও আমার আইনজীবীকে নানা হুমকি দিয়ে গালমন্দ করে। '

উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে।

পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে নুসরাতকে কৌশলে মাদরাসার প্রশাসনিক ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ৮ এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আটজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো চারজনকে আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এরপর মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। আসামি করা হয় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজকে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)