সম্প্রচারমাধ্যমে সবার আইনি সুরক্ষায় কাজ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

সম্প্রচারমাধ্যমে সবার আইনি সুরক্ষায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, দেশে সম্প্রচার নীতিমালা হয়েছে। আমরা এ আইন পাস করতে পারলে এর আলোকে সম্প্রচারমাধ্যমের কর্মীদের চাকরি সুরক্ষা হবে। এছাড়া সম্প্রচারমাধ্যমের সবার জন্য আইনি সুরক্ষায় এক সঙ্গে কাজ করতে হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) সেমিনার হলে বেসরকারি টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসি আয়োজিত ‘সম্প্রচার মাধ্যমের সংকট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।   

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নবম ওয়েজবোর্ডে স্পষ্ট বলা আছে, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য একটি আলাদা নীতিমালা করতে হবে। আমি মনে করি নবম ওয়েজবোর্ডের সুপারিশের আলোকে একটি নীতিমালাও করা প্রয়োজন, যাতে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার শ্রমিক, কর্মচারী, সাংবাদিক সবার জন্য আইনি সুরক্ষা থাকে।  

‘সে লক্ষ্যে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আমি কাজ করব।

সম্প্রচার আইন ও গণমাধ্যমকর্মী আইন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আমরা আশা করব, খুব সহসা আমরা এটি মন্ত্রিসভা হয়ে পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারব। ’

গণমাধ্যম মালিকদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের বলব, সাংবাদিকদের বঞ্চিত করবেন না। সময়মতো বেতন পরিশোধ করবেন। কারণ গণমাধ্যমকর্মীরা অনেক কষ্টে কাজ করেন, তারা যদি সবাই কর্মবিরতি করে, তাহলে চ্যানেল চলবে না। সেটি তারা করছে না। তাদের ধন্যবাদ যে, খেয়ে না খেয়ে, তিনমাস বেতন না পেয়ে তারা কাজ করছে। তাদের এ দরদ সবার অনুধাবন করা প্রয়োজন, যাতে অহেতুক কারো চাকরচ্যুতি না ঘটে। ’

ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই এই প্রাইভেট টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন সরকার গঠন করেন তখনই তিনি প্রথম প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেলের লাইসেন্স দেন। সম্প্রচার মাধ্যম অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বাংলাদেশে গত ১১ বছরে তিন গুণের চেয়ে বেশি বেড়েছে।  

‘২০০৯ সালে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার ক্ষমতা নেন, তখন বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ছিল ১০টি। এখন টেলিভিশনের সংখ্যা সম্প্রচারে আছে প্রায় ৩৪টি, আমরা লাইসেন্স দিয়েছি ৪৫টিকে। অর্থাৎ আরও কিছু সম্প্রচারে আসবে। আমি মন্ত্রণালয়ে যে সমস্যাগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি সেগুলো সমাধানের জন্য প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছি। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভুত সমস্যা হঠাৎ করে সমাধান করে দেওয়া যায় না, একটু সময় প্রয়োজন। ’ 

তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন চলে যাচ্ছিল, সেটি তো আর যাচ্ছে না। এখন যারা মালিক পক্ষ নিশ্চয়ই জানেন, ছয় মাস আগের তুলনায় টেলিভিশনগুলো অনেক ভালো চলছে। যেটা সিঙ্গাপুরে অন্য কোম্পানির মাধ্যমে চলে যেত, আর হুন্ডি হয়ে টাকা চলে যেত, সেটা বন্ধ হয়েছে। সুতরাং পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। একটি পদক্ষেপ নেওয়ার পর কার্যকর হতে কয়েক মাস সময় লাগে।

‘এখানে ১০ বছরের ছেলেও অ্যাকাউন্ট খুলছে, একজনে ২০ টি অ্যাকাউন্ট খুলছে, ফেক আইডি দিয়ে খুলছে। সেখানে তো কোনোভাবেই কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। যদি সেখানে আমাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড, ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে যদি কেউ খুলে, একজন ১৬ বছরের বাচ্চাও খুলতে পারবে, কিন্তু অনুমতি লাগবে। ’

অনুষ্ঠানে ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল