'সুন্দরবনের শান্তিময় পরিস্থিতি যেকোনো মূল্যে ধরে রাখব'

'সুন্দরবনের শান্তিময় পরিস্থিতি যেকোনো মূল্যে ধরে রাখব'

বাগেরহাট প্রতিনিধি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দস্যুমুক্ত ঘোষণার পর সুন্দরবনে এখন শান্তির সুবাতাস বইছে। সুন্দরবন এখন সবার জন্য নিরাপদ।

গত এক বছরে সুন্দরবনে পর্যটকদের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ এই বনে কাউকে আর দস্যুবৃত্তি করতে দেয়া হবে না।

কোনো বিপদগামী সুন্দরবনে দস্যুবৃত্তি করতে চাইলে তার পরিণাম হবে ভয়াবহ। যে কোনো মূল্যে পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় সুন্দরবনকে নিরাপদ রাখা হবে।  

শুক্রবার দুপুরে বাগেরহাট স্টেডিয়ামে সুন্দরবন দস্যুমুক্ত ঘোষণার প্রথম বার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক নির্মূলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এসব অপকর্মের সাথে জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

সুন্দরবন দস্যুমুক্তির প্রথম বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ, কোস্টগার্ডের ডিজি আশরাফুল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামছুল হক টুকু, আদিবাসী শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, ডা. মোজাম্মেল হেসেন এমপি, শেখ সারহান নাসের তন্ময় এমপি, সংরক্ষিত মহিলা এমপি গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন প্রমুখ।  

গত বছরের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এলিট ফোর্স র‌্যাবের সহায়তায় দীর্ঘ ৪০ বছর পর গোটা সুন্দরবন বনদস্যু মুক্ত হয়।

সুন্দরবনের আত্মসমর্পণ করা ৩২টি বাহিনীর মধ্যে সর্বশেষ ৫টি বনদস্যু বাহিনীর আত্মসর্মপণের মধ্যস্থতায় ছিল নিউজটোয়েন্টিফোর টেলিভিশন ও দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ওই সময়ে বনদস্যু বাহিনীগুলো আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে সুন্দরবনের বইতে শুরু করে শান্তির সুবাতাসে। সুন্দরবনে এখন কোনো বারুদের গন্ধ নেই। শোনা যায় না গুলির শব্দ।  

সুন্দরবন দাঁপিয়ে বেড়ানো বনদস্যু বাহিনীগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম র‌্যাবের আহবানে সাড়া দিয়ে ২০১৬ সালের ৩১ মে আত্মসমর্পণ করে মাস্টার বাহিনী প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টারসহ ১০ বনদস্যু।  

গত বছরের ১ নভেম্বর ৬টি বনদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সুন্দরবনের ৩২টি বাহিনী প্রধানসহ সর্বমোট ৩২৮ বনদস্যু সদস্য আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। তারা র‌্যাবের হাতে তুলে দেন ৪৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৩৩ হাজর ৫০৪ রাউন্ড গোলাবারুদ।  

অনুষ্ঠানে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে বিশেষ অবদান এলিট ফোর্সের ডিজি বেনজীর আহমেদ র‌্যাবের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও দুইজন মিডিয়া কর্মীর হাতে ত্রেস্ট তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময়ে বনদস্যুতা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা ৩২টি বাহিনীর ৩২৮ বনদস্যুদের আর্থিক অনুদান ও উপহার সামগ্রী দেয়া হয়।

পরে সুন্দরবনের বনদস্যুতা ও র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে নির্মাণ হতে যাওয়া চলচ্চিত্র 'অপারেশন সুন্দরবন' এর ডিজিটাল লোগো ও মোড়ক উন্মোচন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময় চলচ্চিত্রের পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতারা উপস্থিত ছিলেন।  

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল