শহীদের স্মৃতিতে নির্মিত তোরণের একি অবস্থা!

শহীদের স্মৃতিতে নির্মিত তোরণের একি অবস্থা!

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পৌর শহরে নির্মিত শহীদ আব্দুল বেপারীর নামে নির্মিত তোরণটি হেলে পড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে ১৯৭২ সালে নির্মিত এই তোরণটির দায়িত্বভার ও সংস্কারের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করা হয়েছে। সংস্কারের দাবি উঠেছে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকেও।

জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে মুজিব নগর সরকার গঠনের দিন ১৭ এপ্রিল দুপুরে পাক হানাদার বাহিনী জনবহুল গফরগাঁও বাজারে বর্বরোচিত বিমান হামলা করে।

এ সময় ১৯ জনের প্রাণহানি ঘটে। মুজিব নগর দিবস উপলক্ষ্যে স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী তার তিনতলা ভবনের ছাদে বাংলাদেশের মানচিত্র সম্বলিত স্বাধীন বাংলার পতাকা টানায়। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর বেশ কয়েকটি পাক জঙ্গি বিমান বাজারের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। তখন ব্যবসায়ী আব্দুল বেপারী প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভবনের ছাদে ওঠেন।
নিজের বন্দুক থেকে বোমারু বিমান পরিভ্রমণের সময় গুলি ছোড়েন। মুহূর্তের মধ্যেই বোমা আর মেশিন গানের গুলিতে ঝাঁঝড়া করে দেয় বাজারের নিরীহ মানুষদের। যুদ্ধকালীন সময়ে অন্তত ১৯ জনকে সনাক্ত করা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে অন্যতম গুলি ছুঁড়ে প্রতিবাদকারী ব্যবসায়ী আব্দুল বেপারী।

স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আবুল হাশেম সেই দিনের ঘটনায় বীরত্বপূর্ণ আত্মত্যাগের জন্য বাজারের প্রধান সড়কে শহীদ আব্দুল বেপারীর নামে একটি তোরণ নির্মাণ করেন। পরে তৎকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম তোরণটির উদ্বোধন করেন।

শহীদ আব্দুল বেপারীর সন্তান আমিনুল হক কামাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জল ইতিহাসের অংশ হিসেবে গফরগাঁওবাসী বিজয়ের স্মারক হিসেবে প্রত্যক্ষ করেন এই তোরণ। এখানে শ্রদ্ধাঞ্জলিও জানায়। এটি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। আমাদের আশাবাদ সরকার মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আব্দুল বেপারীর নামে নির্মিত তোরণটি সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

গফরগাঁও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মফিজ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ সময়ে যথাযথ সংস্কারের অভাবে শহীদ তোরণটি অবকাঠামোগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সময়ের প্রয়োজনে তোরণটি পুনঃনির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)