শীতে জল খাওয়ার পরিমাণ এমনিতেই কমে যায় আমাদের। যেহেতু শীতে ঘাম হয়ে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যায় না, তাই জল খাওযার তাগিদও কমতে থাকে এই সময়টায়। তবে গরমে কাজ করতে যতটা জল কাজে লাগায়, শীতেও জৈবিক কাজ সারতে ততটাই জলের ব্যবহার করে আমাদের শরীর। সমস্যা এটাই যে জলের অভাবটা শীতে টের পাওয়ার উপায় থাকে না।
মানবদেহের ৭৫ ভাগই জল। খাবার ছাড়া কয়েক দিন কাটিয়ে দিতে পারলেও জল ছাড়া মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। শারীরিক জটিলতা কিন্তু জলের ঘাটতিতে থেমে থাকে না। একটু খেয়াল রাখলে আর নিয়মানুবর্তী হলে শীতেও জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়ানো যায়।
অল্পেই অসুস্থ হওয়া: শীতে একতুতেই অসুস্থ হলে শুধু ওষুধপত্রে ভরসা রাখবেন না। তার সঙ্গে চেষ্টা করুন জলের পরিমাণও বাড়াতে। শরীরের টক্সিন ও ব্যাকটিরিয়াকে শরীর থেকে জল বার করে দেয়। কম জল খেলে সে সব ভালো করে বের হতে পারে না। ফলে শরীর দুর্বল হতে থাকে। সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন বাইরের যেকোনো ভাইরাসে।
মূত্রের সময় জ্বালা করা: মূত্রের মাধ্যমে শরীরের অনেকটা টক্সিন বেরিয়ে যায়। কিন্তু জল কম খেতে থাকলে শরীর তার পর্যাপ্ত টক্সিন বয়ে নিয়ে যাওয়ার উপকরণ পায় না। তাই মূত্র কম তো হবেই, সাথে তাতে জ্বালাও থাকে। জল বেশি করে খেয়েও যদি এই সমস্যা ঠিক না হয়। তাহলে নিশ্চিত ইউরোলজিস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
কোনও অসুখ ছাড়া মাথা যন্ত্রণা ও সহজে ক্লান্তি আসা: শরীরে জলের অভাব দেখা দিলে একপ্রকারের মাথা যন্ত্রণা দেখা দেয়। এমনিতে মাইগ্রেন বা চোখের কোনও সমস্যা না থাকলেও হঠাৎই মাথা ধরলে বুঝবেন ‘ওয়াটার থেরাপি’ দরকার। শরীরে অল্পেই ঝুপ করে নেমে আসা ক্লান্তিও জানান দেয় যে জলের অভাব ঘটেছে। অনেক পরিশ্রমের কাজ বা গা-ঘামানো কোনও কাজে ব্যস্ত থাকলে ফাঁকে ফাঁকে একটু বিরাম নিয়ে জল খেলে সহজে ক্লান্ত লাগবে না।
ক্ষুধার আধিক্য: যেহেতু জল আর ক্ষুধা জানান কেন্দ্রগুলি শরীরে খুব কাছাকাছি অবস্থান করে, তাই ক্ষুধা পেয়েছে এমন মনে হলেও তা আসলে পিপাসা পাওয়ার নির্দেশও হতে পারে। তাই কিছু খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আবার ক্ষুধা পেলে আর বার বার এমন হতে থাকলে জোর দিন জল খাওয়ার উপর।
ত্বকের সমস্যা: শরীরে টক্সিন জমলে অবধারিত ভাবে তা ত্বককে নিষ্প্রাণ করে তোলে। রোগ ঠেকাতে সহজে পারা যাবে না বলে এর হাত ধরেই ত্বকে দেখা দেবে মরসুমি নানা অসুখ। ত্বক খসখসে হোয়া থেকে শুরু করে ব্রণের হানা- সবটাই কম জল খাওয়ার কারণে হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য: জল কম খেলে শরীর একটা বিষয়ই বোঝে, নিজের জৈবিক কাজগুলো সারতে যেনতেন ভাবে জলের জোগানটি ঠিক রাখা। তাই জল কম খেলে কোলন বর্জ্য জমা করার সময় মল থেকেও জলটুকু শুষে নেবে। ফলে মল কঠিন হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
নিউজ টোয়েন্টিফোর/ডিএ