ভারতের হায়দ্রাবাদে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেয় চার ধর্ষক। হায়দ্রাবাদ পুলিশ শুক্রবার সকালে তাদের ক্রসফায়ার করে সৃষ্টি করল এক অনন্য উদাহরণ। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে চারজন ধর্ষকদের পরিবার থেকে এসেছে চার রকমের প্রতিক্রিয়া।
‘স্যার, যদি আমার ছেলে অন্যায় করে থাকে এবং তা আদালতে প্রমাণিত হয়, তাহলে দয়া করে ওকে গুলি করুন।
’ ছেলের মৃত্যুতে এই প্রতিক্রিয়া ছিল অভিযুক্ত শিবার মায়ের। তবে শিবার বাবার প্রশ্ন, 'কেন শুধুমাত্র এই ঘটনার অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হলো? বাকিদেরও তো এমন শাস্তি প্রাপ্য। তাদেরকেও একইভাবে শাস্তি দেওয়া উচিত। কেন তাদের ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না?'নবীনের বাবার কথা হলো, 'এনকাউন্টারের আগে জেলে থাকা ছেলেদের সঙ্গে তাদের পরিবারকে শেষ দেখাটা অন্তত করতে দেওয়া উচিত ছিল।
আরিফের মৃত্যুর পরে আরিফের মা শোকে দিশেহারা হয়ে গেছেন। ‘আমি জানি না তারা কি করেছিল। আমার ছেলে আর নেই। সে চলে গেছে! অবশ্যই এটা ভুল। আমার ছেলে চলে গেছে। আমি একেবারেই কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। ’ আরিফের এনকাউন্টারের মৃত্যুর খবরে এমনই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তার মা।
‘যদি আমার ছেলে অপরাধ করে থাকে, সে যদি অপরাধী হয়, তবে তাকেও পুড়িয়ে মারুন। এখানে আমার ছেলে বড় বিষয় নয়। অন্যায় হলো অন্যায়। ’ অভিযুক্ত চেন্নাকাসাভলুর মায়ের এমনটা প্রতিক্রিয়া হলেও তার স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কিন্তু পুরোপুরি বিপরীত। তার স্ত্রী বলেন, ‘বিয়ের এক বছরের মধ্যে সে আমাকে ছেড়ে দেয়। দয়া করে আমাকে সেই জায়গায় নিয়ে চলুন যেখানে তাকে গুলি করে মারা হলো। আমাকেও সেই একই জায়গায় গুলি করে মারা হোক। ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। ’
গত বুধবার রাতে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে তেলেঙ্গানার তরুণী চিকিৎসককে চারজন ট্রাকচালক ও ক্লিনার মিলে কৌশলে নিজেদের ফাঁদে ফেলে গণধর্ষণ করে। পরদিন সকালে ওই তরুণীর ঝলসে যাওয়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় টোল প্লাজায় প্রিয়াংকাকে স্কুটি নিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে তখনই ষড়যন্ত্র শুরু করে অভিযুক্ত যুবকরা। পরে প্রিয়াংকার অনুপস্থিতিতে তার স্কুটির টায়ার পাংচার করে দেয় তারা। পরে প্রিয়াংকা ফিরে এসে দেখে তার স্কুটির টায়ার পাংচার হয়ে গেছে। এরপর স্কুটি ঠিক করে দেওয়ার নাম করে প্রিয়াঙ্কাকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় ট্রাকচালক আরিফ ও তার সহকারী শিবা। তার এক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে ধর্ষণ ও খুন করে তারা।
সূত্র থেকে জানা গেছে, পানীয়তে মদ মিশিয়ে সেটা জোর করে তাকে পান করানো হয়েছিল। তারপরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয় তাকে। তার দেহ পোড়াতে তারই স্কুটির জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা যায়। এবার এনকাউন্টারে চার অভিযুক্তকে খতম করা হয়েছে। এটা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সব মহলের বাহবা পাচ্ছে হায়দ্রাবাদ পুলিশ।
নিউজ টোয়েন্টিফোর/ডিএ