বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মঙ্গলবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস সেবা বন্ধ করে দিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার। উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের ডাকা ১১ ঘণ্টার বনধকে কেন্দ্র করে ত্রিপুরায় সহিংসতা শুরু হওয়ার ফলে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে স্থানীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এই বিল নিয়ে রাজ্যের বাসিন্দারা অভিযোগ করছে যে এই বিল জাতিগত পরিচয় হরণ করে নেবে।
আগরতলায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে শুরু করার পর থেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে অশান্তি তৈরির চেষ্টার খবর পাওয়ার পরেই এসব পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের ধালাই জেলার একটি বাজারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তারপর থেকেই আসামের গুয়াহাটিসহ উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন স্থানে জনজীবন থমকে গিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
এই বিলের প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে বনধ ডাকা হয়। প্রধান সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেন বিক্ষোভকারীরা। উত্তর-পূর্ব ফ্রন্টিয়ার রেলের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবরোধ করার কারণে বহু ট্রেন সেবা বাতিল করতে হয়েছে। এতে জনজীবন বিঘ্নিত হচ্ছে। আসামের বিভিন্ন অংশেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি বিধানসভা ও রাজ্যের সচিবালয়সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন অনেক বিক্ষোভকারীরা।
২০১৫ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে। দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তি, আন্দোলনকারী এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা- সবাই অতিসত্বর এই বিল প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন এবং একে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করা হচ্ছে।
নিউজ টোয়েন্টিফোর/ডিএ
