আসামে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৩, বহু আহত

আসামে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ৩, বহু আহত

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের ‘নাগরিকত্ব সংশোধন বিল-ক্যাব’ রাজ্যসভায় (উচ্চকক্ষ) পাস হওয়ার পর উত্তপ্ত উত্তর-পূর্ব রাজ্য আসামে কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নেমে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষে জড়িয়ে লাখো জনতা। আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরো বহু মানুষ। তাদের অনেকে অবস্থা আশঙ্কা জনক।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ সংষর্ঘের ঘটনা ঘটে।

ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে প্রকাশ, স্থানীয় এক পুলিশ কর্মকর্তার জানায়, ভারতের বিমানঘাঁটির কাছের চাবুয়া শহরে বিক্ষোভকারীরা এক পোস্ট অফিসসহ সরকারি সম্পত্তি জ্বালিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল এবং কেন্দ্রীয়মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি সরকার বিলটি পাস করার পর থেকেই উত্তপ্ত গোটা ভারত।

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে আসাম ও ত্রিপুরাসহ উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে। আগের দিন জারি করা কারফিউ ভেঙে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে রাস্তা নেমেছে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির হাজারো মানুষ।

এনডিটিভি’র দুপুরের খবরে বলা হয়, গুয়াহাটির শহরতলীর কোনো কোনো এলাকায় পুলিশ গুলিবর্ষণ করেছে। পুলিশসহ অসংখ্যা মানুষ গুরুতর জখম হয়েছে।   বিক্ষুব্ধরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে রেখেছে। তারা একাধিক বাস ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগও করেছে।  

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিলটি পাস হওয়ার পরপরই থমথমে অবস্থা বিরাজ করে গোটা ভারত। আসামা ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ করে সাধারণ মানুষ। আসামের গুয়াহাটিতে কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ জারি করা হয় ত্রিপুরার একাধিক স্থানেও। দিনভরই প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল উত্তর-পূর্বের দুই রাজ্য।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসাম ও ত্রিপুরায় সেনাবাহিনী মোতায়েনও করা হয়েছে।

প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, সেনা জওয়ানরা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে কাজ করবেন। পাশাপাশি উত্তেজনাপ্রবণ ও স্পর্শকাতর এলাকায় এলাকা দখলে রাখতে ‘রুট মার্চ’ করবে।  

প্রতিবাদ চলতে থাকায় আসাম ও প্রতিবেশী ত্রিপুরায় সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

গুয়াহাটি ও ডিব্রুগড়গামী বহু ফ্লাইট বাতিল করা হয়। হাজার হাজার লোক রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে অংশ নিতে থাকায় এক পর্যায়ে আসামের চারটি এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বিক্ষোভের আঁচ আসমের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছে মেঘালয়েও। বৃহস্পতিবার শিলং জুড়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। কংগ্রেসের তরফে আলাদা করে বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিক্ষোভের গুরুত্ব বুঝে মেঘালয়েও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, বিক্ষোভের মুখে আসামের বৃহত্তম শহর গুয়াহাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়।

ডিব্রুগড়ে প্রতিবাদকারীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাড়িতে চড়াও হওয়ার পর সেখানেও কারফিউ জারি হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)