দেবে গেছে ব্রিজ, ৯০ কি.মি. যানজট

দেবে গেছে ব্রিজ, ৯০ কি.মি. যানজট

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের ৯০ কিলোমিটার জুড়ে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। তীব্র যানজটে হাজার হাজার যাত্রীবাহী বাস, মালবোঝাই ট্রাক ও মাইক্রোবাস আটকা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ যানজট দেখা যায়। এরআগে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত থেকে শুরু হয় এ যানজট।

স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে শুরু হওয়া যানজট বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভয়াবহ আকার ধারণ করে। বুধবার রাতে শীতের সঙ্গে কুয়াশায় থেমে যায় যানবাহনের চাকা। ১২-১৪ ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি অনেকেই।

হাইওয়ে পুলিশ ও যানজটে আটকা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া ও মান্নাননগর এলাকায় চলছে সংস্কারকাজ।

এজন্য ধীরগতিতে চলছে গাড়ি। সেই সঙ্গে ঢাকা-বগুড়া
মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের ভূইয়াগাঁতি এলাকার পুরাতন একটি ব্রিজের পাটাতন ভেঙে দেবে গেছে। ফলে এই মহাসড়ক দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য রাত থেকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে ভয়াবহ আকার ধারণ করে যানজট।

এতে হাজার হাজার যানবাহন যানজটে আটকা পড়েছে।

যাত্রীরা জানিয়েছেন, পুরো মহাসড়কজুড়ে যানজট। বুধবার রাত ১২ টায় বাসে ওঠা যাত্রীরা এখনো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেননি। তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন সবাই। থেমে থেমে চলছে গাড়ি।

নাটোর জেলা ট্রাফিক পুলিশের সার্জন মো. মশিউর রহমান বলেন, বনপাড়া-হাটিকুমরুল সড়ক দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬ জেলার পরিবহন চলাচল করে। সড়কের সংস্কারকাজের জন্য বেশ কিছু দিন ধরে যানজট সয়ে এসব পরিবহন চলাচল করত। কিন্তু বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের ভূইয়াগাতিতে ব্রিজ দেবে যাওয়ার কারণে রংপুর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরের ১৬ জেলার সব পরিবহন নাটোর ঘুরে এই মহাসড়কে চলাচল শুরু করেছে। এ কারণে যানজট পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিরসনে পুলিশকে বেগ পেতে হচ্ছে। আমারা চেষ্টা করছি যানজট নিরসনের।

কয়েকজন বাসযাত্রী জানিয়েছেন, নাটোর যাওয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার রাত ১০টায় পঞ্চগড় থেকে গাড়িতে ওঠেন তারা। মাঝ রাতে বগুড়া ছেড়ে ভূইয়াগাতি পর্যন্ত বাসটি এসেছিল। কিন্তু সেখানকার ব্রিজ দেবে যাওয়ায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ঘুরপথে নাটোর হয়ে
গুরুদাসপুর উপজেলার হাজিরহাটে আটকে পড়েছেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা একই স্থানে আটকে রয়েছেন তারা।

রংপুর থেকে নাটোর আসা বাসযাত্রী জামিল হোসেন বলেন, গতকাল রাত ১২টায় রংপুর থেকে রওনা দিয়েছি। এখন পর্যন্ত গুরুদাসপুর উপজেলার হাজিরহাটে আটকে আছি। শীতের রাতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা রাস্তায় আটকে আছি।

যানবাহন চালকরা জানিয়েছেন, তারা বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সহজে এলেও সেতুতে এপাশে এসে যানজটে আটকে পড়েন। টানা ছয়-সাত ঘণ্টা দুর্ভোগ শেষে গুরুদাসপুরে পৌঁছান।

সেতু থেকে হাজিরপুর পর্যন্ত হাজারো গাড়ি সড়কের উভয় পাশে লাইন ধরে আটক রয়েছে। যানজন নিরসনের পুলিশের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)