বিয়ে না করেই বিবাহিত প্রেমিক কমল হাসানের সন্তানের মা হন সারিকা

বিয়ে না করেই বিবাহিত প্রেমিক কমল হাসানের সন্তানের মা হন সারিকা

অনলাইন ডেস্ক

শৈশবেই দেখেন বাবা মায়ের বিচ্ছেদ। তাই ছোট থেকেই দায়িত্ব নিতে হয়েছিল পরিবারের। দায়িত্ব নেওয়ার পর্ব চলতে থাকে পরবর্তী জীবনেও। একটা সময়ের পরে দুই মেয়ের ক্ষেত্রেও তাকে পালন করতে হয় সিঙ্গেল মাদারের ভূমিকা।

অভিনয়-ব্যক্তিত্ব-মানসিকতায় বলিউডের সমসাময়িক অভিনেত্রীদের থেকে একেবারেই আলাদা সারিকা।

এ অভিনেত্রীর জন্মগত নাম সারিকা ঠাকুর। তার বাবা ছিলেন মারাঠি, মা ছিলেন হিমাচলি। সারিকার জন্ম দিল্লিতে হয়।

তিনি যখন খুব ছোট, তার বাবা তাদের ফেলে সংসার ত্যাগ করেন। ফলে সারিকাকে অনেক ছোট থেকেই অভিনয় শুরু করতে হয়। উপার্জন করার চাপে এসে তিনি কোনোদিন স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত পাননি।

শিশুশিল্পী হিসেবে সারিকার প্রথম কাজ ‘মাঝলি দিদি’। এরপর ষাট ও সত্তর দশকের অনেক ছবিতে সারিকা শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুপারহিট ছবি ‘হমরাজ’-এ নায়িকা ভিমির মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এ নায়িকা। পরে রাজশ্রী প্রোডাকশনের ‘গীত গাতা চল’-এ সচিনের নায়িকা হয়েছিলেন তিনি। সচিন-সারিকা ছিল বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি।

অভিনয় সূত্রেই সুপারস্টার কমল হাসানের সঙ্গে আলাপ হয় সারিকার। প্রথমে আলাপ তারপর প্রণয়। তখন কমল হাসান আর বাণী গণপতির দাম্পত্যের বয়স প্রায় এক দশকের কাছাকাছি। সব জেনেশুনেই কমলের সঙ্গে ধীরে ধীরে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সারিকা। দুজনের কেউ সেটা গোপনও করেননি। এদিকে বাণী গণপতির সঙ্গে বিচ্ছেদের আগেই সারিকার সঙ্গে লিভ ইন শুরু করে দেন কমল হাসান। তাদের প্রথম সন্তান শ্রুতির জন্ম হয় ১৯৮৬ সালে। তারও দুবছর পর কমল হাসান সারিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন। তখনও প্রথম স্ত্রী বাণীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি কমলের। ১৯৯১ সালে জন্ম নেয় কমল-সারিকার দ্বিতীয় মেয়ে অক্ষরা। দুই মেয়েকে নিয়ে কমল-সারিকার দাম্পত্যকে ইন্ডাস্ট্রিতে আদর্শ হিসেবে মানা হত। কিন্তু হঠাৎ সবাইকে হতবাক করে দিয়ে তারা ১৬ বছরের দাম্পত্যের ইতি টানেন ২০০৪ সালে।

বিয়ে ভাঙার কারণ নিয়ে দুজনের কেউ মুখ আজ পর্যন্ত মুখ খোলেননি। কিন্তু গুঞ্জন আছে, সারিকার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী গৌতমীর সঙ্গে কমলের সম্পর্ক ধরা পড়ে যায় সারিকার কাছে। তখন সারিকা দাম্পত্য থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। কমলের সাথে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন সারিকা। প্রায় সেই একই সময়ে কমল হাসান তার প্রথম স্ত্রী বাণী গণপতির কাছে ডিভোর্স চেয়ে বসেন। বলতে গেলে কমল হাসানের দুটি বিয়ে কার্যত একই সময়ে কাগজে কলমে শেষ হয়।

কমল হাসান বরাবর বলেছেন তিনি বিয়ে নামক প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাসী নন। বাণী গণপতি এবং সারিকার সঙ্গে দাম্পত্যের পাট চুকিয়ে দেওয়ার পরেও তিনি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। গৌতমীর সঙ্গে দীর্ঘ লিভ ইন-এর পরে ভেঙেছেন সেই সম্পর্কটাও। অন্যদিকে, সারিকা একেবারেই থেকেছেন একাই। কমলকে বিয়ে করে তিনি অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে জীবনের দ্বিতীয় পর্বে আবার নতুন করে অভিনয় শুরু করেন তিনি। অভিনেত্রী হিসেবে ডিভোর্সের পরেই তিনি বেশি সফল।

অভিনেত্রীর পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি একজন সফল কস্টিউম ডিজাইনার, সাউন্ড জিজাইনার এবং সহকারী পরিচলক হিসেবেও পরিচিত। ২০০০ সালে সাবেক স্বামী কমল হাসানের ছবি ‘হে রাম’-এর পোশাক পরিকল্পনার জন্য জাতীয় পুরস্কার পান সারিকা।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/ডিএ