পাহাড়ে পর্যটকের ঢল, খালি নেই হোটেল-মোটেল

পাহাড়ে পর্যটকের ঢল, খালি নেই হোটেল-মোটেল

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি প্রতিনিধি

থার্টি ফাস্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে নামছে পর্যটকের ঢল। প্রায় প্রতিদিন আসছে দুই থেকে চার হাজারেরও অধিক মানুষ। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লাখো মানুষের অরণ্যে পরিণত হয় পাহাড়। শুধু রাঙামাটি নয়, এমন পর্যটক উৎসবে মেতেছে অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান।

সবুজ অরণ্যে রাজ্য পার্বত্যাঞ্চলে পুরোদমে শুরু হয়েছে পর্যটন মৌসুম। বইছে পর্যটক উৎসবের আমেজ। পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। অগণিত পর্যটক আগমনে তিল পরিমাণ জায়গা খালি নেই কোথাও।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন ভিড় থাকে বেশি।

অন্যদিকে থার্টি ফাস্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষকে কেন্দ্র করে শতভাগ বুকিং রয়েছে শহরের আবসিক হোটেল, মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসগুলো। কোথাও রুম খালি নেই। আছে অগ্রিম বুকিং। সড়কে, সড়কে পিকনিক পার্টি ও ভ্রমণ পিপাসুদের গাড়ির বহরের ভিড় যেন লেগে আছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার রাঙামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ছিল লোকে লোকারণ্যে ভরপুর। প্রকৃতির টানে দূর-দূরান্ত থেকে এসেছে দেশি-বিদেশি হাজার হাজার পর্যটক। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো পার্ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কাপ্তাই হ্রদ নৌ-ভ্রমণের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছে। আবার কেউ প্রকৃতিকে উজাড় করে দিচ্ছে নিজেকে। বিকালের সূর্যের সোনালী রঙ যখন ছড়িয়ে পড়ে, ঠিক তখনি মানুষের ভিড় জমে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে। শীতের উষ্ণতায় হ্রদ, পাহাড় আর কুয়াশার লুকোচুড়ি খেলার দেখা মিলে এখানে। তাতেই মুগ্ধ পর্যটকরা।

রাঙামাটি পর্যটক কমপ্লেক্সের বাণিজিক কর্মকর্তা সূর্য্য সেন ত্রিপুরা জানান, রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্স, ডিসি বাংলো পার্ক, পলওয়ে পার্ক, সুবলং ঝর্ণা, আসামবস্তি সড়ক, প্যাদা টিং টিং, বরগ্যাং ও ফুরামন পাহাড়ের মত অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে রাঙামাটিতে। এসব স্থানে পর্যটকদের জন্য গড়ে তুলে হয়েছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট আর বিনোদন কেন্দ্র।

রেস্টুরেন্টগুরোতে মিলছে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের বিভিন্ন খাবার। যার প্রতি পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে সবচেয়ে বেশি। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে এ অঞ্চলের মানুষের দেশিও পোশাক ও পণ্য সামগ্রী। যারা ঘুরতে আসছে তারাও ছুটে যাচ্ছে এসব শপিংমলে। ফলে চাঙ্গা হয়ে উঠছে স্থানীয় ক্ষুদ্র পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলো। একই সাথে ব্যস্ত সময় পাড় করছে কাপ্তাই হ্রদের নৌ- ট্যুরিস্ট বোর্ট ব্যবসায়ীরা। দিন রাত ছুটছে তারা  কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে।

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সর ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, শীতের শুরু থেকে এখানে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার পর্যটক আসছে এখানে। বিশেষ করে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটি দিন পর্যটকদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রচুর। রাঙামাটি কমপ্লেক্সের পর্যটন মোটেলের সবগুলো রুম ১০০ভাগ বুকিং রয়েছে।

‌‌‌‌‌‌আর ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটক আসছে অগণিত। শুধু দেশির আশ-পাশের জেলার পর্যটকরাই নয়-এখানে আসছে বিদেশী পর্যটকও। তাদের জন্য নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই। পর্যটক কেন্দ্রগুলোতে আছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

তিনি আরও বলেন, এবছর আমাদের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে চার কোটি। এমনভাবে পর্যটক আসা অব্যাহত থাকলে  আশা করি, এবার পর্যটন কমপ্লেক্সে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে কয়েক গুণ।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর