‘অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে বাংলার মানুষ’

‘অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে বাংলার মানুষ’

অনলাইন ডেস্ক

‘সরকার এতো উন্নয়ন উন্নয়ন যে করে কিন্তু এই উন্নয়ন করতে গিয়ে কত টাকা বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া হচ্ছে, কত টাকা বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। আমরা আইয়ুব খানের সময় দেখেছি, তারা উন্নয়নের বক্তব্য দিয়ে দিয়ে, আবার তাদের পতনও দেখেছি। অর্থাৎ উন্নয়নের বক্তব্য দিতে দিতে যে পতন হয়, সেটার তো সব চেয়ে বড় উদাহরণ আইয়ুব খান।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন সংবিধান প্রণেতা গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের মাসে সবার সঙ্গে আমি উৎসাহিত হয়ে বলব, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর তো হতে চলছে। এইবার আসুন, যে জিনিসটা আমাদের পাওয়ার কথা, কিন্তু বঞ্চিত করা হয়েছে যে, জনগণকে সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে দেখতে চাই।

‘আমরা যদি সত্যিকার মালিক হই, তাহলে আমাদের মাথা কেনার মতো কেউ আছে বলে মনে করি না।

আমাদের মাথা কেনার মতো টাকা কারও নেই। আর টাকা থাকলেও কেউ আমাদের মাথা কিনতে পারবে না। কারণ, বাঙালির মাথা কেউ কিনতে পারে না। কিছু লোককে কায়দা করে স্বল্প সময়ের জন্য বাগে নিতে পারে, কিন্তু ধরে রাখতে পারে না। ’

তিনি বলেন, এই কথাগুলো কেবল মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললে হবে না। আমাদের লোক সংখ্যা তো কোটি, কোটি। এখানের কথা পাড়া-মহল্লায় পৌঁছাতে হবে, ইউনিয়নে পৌঁছাতে, উপজেলায় পৌঁছাতে হবে, জেলায় জেলায় পৌঁছাতে হবে।

এই কাজটা করার জন্য সঙ্গে সঙ্গে নেমে পড়তে হবে বলেও জানান তিনি।

ড. কামাল বলেন, আমি সবচেয়ে বেশি আশাবাদী সেই সত্তরের দুর্দিনে যখন সারা পৃথিবীর মানুষ বলছিল এমনকি একাত্তরেও বলছিল স্বাধীনতা অসম্ভব। কী করে হবে এটা হতে পারে না। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলাম। এটাই প্রমাণ করে বাংলার মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।

এ কারণেই আমি বলি আমাদের নিরাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই, বলেন কামাল হোসেন।

কাউন্সিলে উপস্থিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের আরও বৃহত্তর ঐক্য তৈরি করতে হবে। শুধু ঐক্যফ্রন্ট নয়, অন্য জোটগুলো নয়, আমাদের সমস্ত দেশের মানুষকে এক করে, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দলগুলোকে এক করে আজকে লড়াই করতে হবে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ’

‘আজকে আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধ হই, তাহলে কোনো স্বৈরশাসনই, কোনো একনায়কই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। ’

ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন প্রসঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

‘অন্য দেশের আইন এ দেশকে যদি আক্রান্ত করে, তাহলে সেটা নিয়ে বলার অধিকার অবশ্যই এ দেশের মানুষের আছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারতের আইন পাসের সময়ে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টানা হলেও সরকার এ বিষয়ে কোনো রকমের গুরুত্ব দিচ্ছে না। রোহিঙ্গা ও ভারত থেকে পুশ ব্যাকের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে দুর্যোগের ভূখণ্ডে পরিণত করার চেষ্টা চলছে। ’

জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড আব্দুল মঈন খান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর