জাতীয় জুডো প্রতিযোগিতায় ফরিদপুরের সালথার নিলুফা আক্তার সপ্তম বারের মতো স্বর্ণ পদক জিতলেন। আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশন ও বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন কতৃক প্রদত্ত সনদপত্র এবং প্রাপ্ত স্বর্ণ পদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবারই বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী হয়ে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে তিনি এ সব স্বর্ণ পদক লাভ করেন। এ ছাড়াও জুডো প্রতিযোগিতায় তিনি এক বার রৌপ্য ও এক বার তাম্র পদক লাভ করেন।
ফুটবল প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন এ ক্রীড়াবিদ। নিলুফা আক্তার ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের সিংহপ্রতাপ গ্রামের শহিদ মৃধা ও গৃহিনী মাজেদা বেগম দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা।
জানা যায়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয় জুডো প্রতিযোগীতায় বাংলাদেশ আনসারের হয়ে অংশ নিয়ে ১ম বার স্বর্ণ পদক লাভ করেন নিলুফা আক্তার। একই সংস্থার আয়োজনে আনসারের হয়ে ২০১৭ সালে অনুর্ধ্ব -১৮ জুডো প্রতিযোগীতায় একক ও দলগতভাবে দু’টি স্বর্ণ পদক লাভ করেন তিনি।
এতে তার থলিতে জমা হয় ৫ স্বর্ণ পদক। একই বছর বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের আয়োজনে বাংলাদেশ যুব গেমস্ ২০১৮-তে জুডো প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিলুফা ৬ষ্ঠ বার স্বর্ণ পদক লাভ করেন।
২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবস ক্লাব কাপ জুডো প্রতিযোগিতায় তিনি ৭ম বার স্বর্ণ পদক লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি এশিয়া অঞ্চল ভিত্তিক “স্পোর্টস্ ফর টুমোরো জুডো চ্যাম্পিয়নয়নশিপ ২০১৭” তে অংশ নিয়ে তার ও স্বাধীনতা দিবস জুডো প্রতিযোগীতা ২০১৯ এ অংশ নিয়ে রৌপ্য পদক লাভ করেন।
অন্যদিকে নিলুফা আক্তার ২০১৪ সালে যৌথভাবে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও প্লান ইন্টান্যাশনাল বাংলাদেশ আয়োজিত ফুটবল প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে সফলতার সাথে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করেন।
নিলুফা আক্তারের এমন সাফল্যে সালথা উপজেলা বাসিরা অনেকেই বলেন, নিলুফা আক্তার জুডো প্রতিযোগিতায় বার বার স্বর্ণ পদক জিতে তিনি এখন নিজেই স্বর্ণ কন্যায় পরিনত হয়েছেন। সালথাবাসী তার সাফল্যে গর্বিত। স্থানীয়ভাবে এ সফল নারী ক্রীড়াবিদকে সংবর্ধনা দিলে একদিকে যেমন তার প্রাপ্য সম্মান পেতেন অন্য দিকে এলাকার প্রতি তার মমত্ববোধ বেড়ে যেত।
নিলুফা আক্তারের বাবা শহিদ মৃধা বলেন, নিলুফা বাংলাদেশ আনসারের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয়ভাবে নিজের সফলতার প্রমান দিয়ে নিজ জন্মভূমি সালথার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। স্থানীয়ভাবে তার কৃতিত্বের মূল্যায়ন করলে আমরা বেশি আনন্দিত হতাম।
সফল নারী ক্রীড়াবিদ নিলুফা আক্তার আশা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও মাননীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি আমাদের মুরব্বী। তাদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়ে দোয়া নিতে পারলেই আমি নিজেকে ধন্য মনে করব। তাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হবে কিনা তাও জানি না। এলাকার কেউ আমাকে অভিনন্দন জানালো কি না এটা নিয়ে আমি ভাবি না। আরও সফলতা অর্জনই আমার লক্ষ্য।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আনসারের জুডো প্রশিক্ষক সৈয়দ আলী আনোয়ার বলেন, নিলুফা আক্তার একজন সফল জুডোবিদ। এত কম বয়সে তার অভাবনীয় সাফল্যে আমরা গর্বিত। তিনি বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী হয়ে অংশ নেন। এতে তাকে সম্মানী ভাতা দেয়া হয়। তার একটি স্থায়ী কর্মসংস্থান থাকলে তিনি আরও উজ্জীবিত হতেন।
নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল