সবকিছুতেই যেন এলাহি ভরসা

সবকিছুতেই যেন এলাহি ভরসা

নঈম নিজাম

‘এই কথাটি মনে রেখো, তোমাদের এই হাসি খেলায়, আমি যে গান গেয়েছিলাম... জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায়। ’ গানে কণ্ঠ মেলাচ্ছেন অঞ্জনা ভৌমিক, আর শুনছেন উত্তম কুমার। ছবির নাম ‘চৌরঙ্গি’। শংকরের বিখ্যাত উপন্যাস।

পরে সিনেমা তৈরি হয়। উত্তম কুমারের বিপরীতে সুচিত্রা সেনকে ছাড়াই একটি অসাধারণ ছবি। উপন্যাস পড়ার পর ছবিটিও দেখেছিলাম। পাঁচ তারকা শাজাহান হোটেলের কর্মীদের নিয়েই পুরো কাহিনি।
হোটেলে আগত অতিথিদের চাকচিক্যের আড়ালে আধুনিক মানুষদের অন্ধকার জীবনের অজানা কাহিনিকে ঘিরেই চৌরঙ্গি।  

ছবির শেষ দিকে একদিকে বিউগলের করুণ সুরের মূর্ছনা, অন্যদিকে কিছু কিছু সংলাপ এখনো মনে দাগ কেটে আছে। গোমেজ হোটেল থেকে বিদায়ের আগে বিদেশি গানের সুর ধরেন। অর্থ জানতে চান শংকর। গানের লাইনটি হলো, ‘যা হবার তা হবেই। ভবিষ্যতের খোঁজ নেওয়া আমাদের কাজ নয়। ’ চুপ মেরে যান শংকর। চাকরির বাজারে কঠিন সংকটের সময় তদবির করে শংকর যোগ দিয়েছিলেন মমতাজ হোটেলে। কীভাবে কাজ করবেন বুঝতে পারছিলেন না। তখনই পরিচয় হয় বোসের সঙ্গে। বোস চরিত্রে অভিনয় করেন উত্তম কুমার।  

সহকর্মী হিসেবে শংকরকে বড় ভাইয়ের মতো কাজগুলো বুঝিয়ে দেন বোস। এভাবে তাদের গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শংকর বিস্ময় নিয়ে দেখেন, হোটেলে আসা সমাজের নামিদামি মানুষদের নানা চেহারা। উত্তম সবকিছু হাসিমুখে সামাল দেন। সবাইকে ম্যানেজে রাখেন। এর মাঝে ভালোবাসার জালে পড়ে নানা অনুশোচনায় হোটেলের এক নারী সহকর্মী আত্মহত্যা করেন। এ আত্মহত্যা পুরো হোটেলকে নাড়া দেয়। শোকাহত করে। কিন্তু এ শোক মুহূর্তে ঢাকা পড়ে চাকচিক্যের আড়ালে।

আবার সবাই মেতে ওঠেন কর্মব্যস্ততায়। জমে ওঠে ড্যান্স বার। উত্তম কুমারও প্রেমে পড়েন হোটেলে আসা বিমানবালা সুজাতার। বিয়ে ও নতুন জীবনের স্বপ্নে একদিন উত্তম চলে যান হোটেলের চাকরি ছেড়ে মুম্বাই। এর মাঝে হোটেল ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তন আসতে থাকে। চাকরি হারান শংকর। হোটেল থেকে বের হওয়ার মুহূর্তে জানতে পারেন সুজাতা তার জীবনের শেষ ফ্লাইটে চড়ে মারা গেছেন। এক অনিশ্চয়তায় বেরিয়ে পড়েন শংকর।

নাজিম হিকমত বলেছেন, বিংশ শতাব্দীতে শোকের আয়ু বড়জোর এক বছর। বাস্তবে আরও কম। মানুষ সবকিছু নীরবে ভুলে যায়। আমাদের কত বন্ধু এভাবে চলে গেছেন, কতজনকে মনে রেখেছি? জগৎ সংসার বড় কষ্টের একটি জায়গা। ক্ষণিকের মায়ার বাঁধন আমরা সৃষ্টি করি। জীবনের রং ফুরালে এ মায়ার বাঁধনও শেষ হয়ে যায়। আকাশের রঙের মতো মুহূর্তে বদলে যায় সবকিছু। তার পরও অকারণে লড়াই করেই চলি। হাসপাতালে ভর্তির কয়েকদিন আগে সাবেক এমপি ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পী এলেন অফিসে। দুপুরে আমাদের সঙ্গে খেলেন। শেয়ার করলেন রাজনীতির অনেক সুখ-দুঃখ। দুই দিন পরই শুনি বাপ্পী হাসপাতালে ভর্তি শ্বাসকষ্ট নিয়ে। ভাবলাম ঠিক হয়ে যাবেন। না, বাপ্পী ঠিক হলেন না। চলে গেলেন চিরতরে। মানুষ এভাবেই হারিয়ে যায়। চলে যায়।

জানা-অজানা অনেক কষ্ট নিয়েই মানুষ বেঁচে থাকে। চলে যাওয়ার সময় কিছুই নিয়ে যায় না। অথচ বেঁচে থাকার সময় হিসাব রাখে প্রতিটি মুহূর্তের। সামান্য পান থেকে চুন খসলেই হিসাব-নিকাশ দিয়ে যেতে হয়। জাগতিক চাহিদার হৃদয়ে জমে থাকা অজানা কষ্টগুলো নিজের অজান্তে মাঝে মাঝে আঘাত হানে। কখনো কখনো বেরিয়ে আসে সেই দীর্ঘশ্বাস, রক্তক্ষরণ হয়ে ওঠে। যা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যায়। আস্থার জায়গাগুলো নষ্ট হলে এমনই হয়। চাওয়া-পাওয়ার হিসাবগুলো সহজে মেলে না। ছোট ছোট দুঃখ-কষ্ট একটা সময়ে বড় হয়ে ওঠে। মানুষের মনটা খোলা আকাশের মতো কেন হয় না? 

এত বড় আকাশটার সামনে দাঁড়িয়েও সব প্রশ্নের জবাব মেলে না। আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসার জায়গাগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। আশার আলো হারিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘোরতর অমানিশা। কখনো কখনো ভাবনায় আসে উত্তরণের পথ কী? উত্তর পাই না। সেদিন রাস্তায় বেরিয়ে খেয়াল করলাম বাস- ট্রাকের পেছনে লেখা- এলাহি ভরসা। পরিবহনে কেন এমন লেখা জানতে চাইলাম এক স্থপতির কাছে। জবাবে বললেন, এই বাস-ট্রাক এলাহি ভরসা নিয়ে রাস্তায় বের হয়। তাদের নিজেদের জীবন-মৃত্যুর পরোয়া নেই। কীভাবে অন্যের গ্যারান্টি দেবে? তাই লিখে রেখেছে এলাহি ভরসা সবার জন্য। আমরাও চলছি এলাহি ভরসার এক অদ্ভুত জগতে।

আস্থাহীনতার এ সমাজে কোথাও ভরসা রাখা যায় না বলেই এলাহি ভরসা। কি সমাজ, কি রাজনীতি, কি মানবজীবন চারদিকে তাকালেই চোখে পড়ে ভেজাল। নিরাপদ খাবার কিনবেন বেঁচে থাকার জন্য? বাজারে গেলে শুধুই ভেজাল! খাবারে ভেজাল, মাছ-মাংস, শাক-সবজিতে ফরমালিন। ফল কিনেও শান্তি নেই। অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাবেন? উপায় নেই। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেই। চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় লুটের উৎসব। শিক্ষাঙ্গনে সন্তানকে পাঠাবেন? সেখানেও অশান্তি। সস্তা দরের ছাত্রনেতারা জড়িয়ে পড়ছেন চাঁদাবাজিতে।  

শিক্ষকরা ব্যস্ত দলীয় রাজনীতিতে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে দেখবেন নিচে মাংসের দোকান, ওপরে বিশ্ববিদ্যালয়। পত্রিকা পড়ে, টিভি দেখে শান্তি পাবেন না। মিডিয়াকর্মীরাও নিজের কাজটুকু নিরপেক্ষভাবে করা ছাড়া সবকিছু নিয়ে ব্যস্ত। ব্যাংকে যাবেন? ভয় নিয়ে ফিরবেন গচ্ছিত অর্থ লুট হবে না তো? শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ হয়। সরকারি অফিসে ঘাটে ঘাটে হয়রানি। আল্লাহর বারো মাস শহরের সড়কে চলে ভাঙাভাঙি। ৫৬ সংস্থার সমন্বয় ৫০ বছরেও হলো না। সরকারি কর্মকর্তারা পুকুর খনন দেখতে বিদেশ যান! সর্বস্তরে নীতি ও নৈতিকতা শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কথার ফুলঝুরির অভাব নেই কোথাও। সবারই পান্ডিত্য আছে সবখানে, শুধু নিজের কাজটুকু ঠিকভাবে করা ছাড়া।

মানুষ এখন শুধু মানুষকে ঠকানো নিয়েই ব্যস্ত। কিন্তু একবারও কেউ বুঝতে চায় না অন্যকে ঠকাতে গিয়ে অজান্তে নিজেই ঠকছে। পেশাদারিত্ব বিলুপ্ত হচ্ছে। এখন আর আমরা সাংবাদিক, প্রকৌশলী, ডাক্তার, আইনজীবী, পেশাদার সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই না। আমরা দলবাজ, দলদাস, দলকানা হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। ব্যক্তিত্ব নিয়ে কাজ করা আমাদের কারও পছন্দ নয়। ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে আমরা রাজনৈতিক কামলা হতে ভালোবাসি। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করুক। পেশাজীবীরা থাকুক পেশার উন্নয়নে। তাহলে সমস্যা কমে যায়। সবকিছুতে ফিরে আসে স্বাভাবিকতা। আগেও লিখেছি আবারও বলছি, এ দেশে মানবতা ছিল। এক গ্রামের বিপদে দশ গ্রামের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ত। এখন আর তা নেই। এখন একজন মানুষকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয় পিটিয়ে, বাকি সবাই মিলে তামাশা দেখে। ছবি তোলে।

ফেসবুকে দেয়। লাইক কমেন্ট নিয়ে আলোচনা করে। শহরের নাগরিক জীবনে একই ভবনে বাস ছয়টি পরিবারের, কিন্তু কেউ কারও খোঁজ রাখে না। এ বাসায় বিয়ের অনুষ্ঠান, পাশের বাসায় হয় মৃত মানুষের দাফনের আয়োজন। কেউ কারও খবর রাখে না। বড় নিষ্ঠুর একটি সমাজ তৈরি হয়েছে। সময়টা কেমন যেন বদলে গেছে। এ বদলে যাওয়া সমাজ আমার নয়। নষ্ট আর খারাপকে মেনে নেওয়া যায় না। বুঝতে হবে, সময় সব সময় একরকম থাকে না। এত বড় দল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও ওঠানামা ছিল। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লিখেছেন, ‘ঢাকায় তখন একটা ত্রাসের রাজত্ব চলছে। ভয়ে মানুষ কোনো কথা বলে না। কথা বললেই গ্রেফতার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে একই অবস্থা। আওয়ামী লীগ অফিসে কেউই আসে না ভয়ে। আমি ও কামারুজ্জামান সাহেব বিকালে বসে থাকি। অনেক চেনা লোক দেখলাম, নবাবপুর দিয়ে যাবার সময় আমাদের অফিসের দিকে আসলেই মুখ ঘুরিয়ে নিতেন। দু-একজন আমাদের দলের সদস্যও ছিল। ’ এ রকম সময় আওয়ামী লীগের আরও অনেকবার হয়েছিল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ কঠিন দুঃসময় অতিক্রম করেছিল। একইভাবে খারাপ সময় পার করে ২০০১ সালের ভোটের পর। সেই সময়গুলো এখন আর কারও হয়তো মনে নেই। এই দারুণ সুসময়ে শুধুই কলকাকলির সুরসংগীত। আসমান থেকে ক্ষমতার সুবাতাস বয়ে চলেছে। প্রার্থনা করি এমন যেন থাকে সারা জীবন। সুসময় এলে আমরা সব সময় অতীত ভুলে যাই। মনে করি সব সময় এমনই ছিল। এমনই যাবে। পরিবর্তন শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বজুড়েই হয়। তাই সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। সতর্ক চলারও বিকল্প নেই। অকারণে নিজের পরীক্ষিত মানুষদের ছুড়ে ফেলে দেওয়ার কী দরকার?

আবারও বলছি, সময় একরকম কখনো যায় না। ওঠানামা করবেই। চীন এখন বিশাল অর্থনৈতিক শক্তি। চীনকে বাদ দিয়ে সারা দুনিয়ায় কোনো কিছু ভাবাই যায় না। অথচ একদিন চীনের উৎকণ্ঠা ছিল নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে। বেশিদিন আগের কথা নয়। কী কারণে বিশাল গ্রেট ওয়াল নির্মাণ করল সেই ইতিহাসে যাব না। আলোচনার সময়টা ১৯৩৭ সাল। চারদিকে যুদ্ধের দামামা। ওই সময় ব্রিটেনের লেবার পার্টির নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট অ্যাটলি একটি চিঠি পান চীনের মাও সে তুংয়ের কাছ থেকে।

চিঠিতে মাও লিখেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ব্রিটিশ জনগণ যখন সত্যটা জানতে পারবে যে কীভাবে জাপানিরা আগ্রাসন চালাচ্ছে চীনে, তখন তারা চীনা জনগণকে সমর্থন করবে। ব্রিটিশ জনগণ নিশ্চয়ই তাদের সরকারকে চাপ দেবে এ বিপদ মোকাবিলায়। কারণ এ বিপদ আমাদের মতো তাদের ওপরও আসতে পারে। ’ এ চিঠি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছিলেন ব্রিটিশ নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের বিপক্ষেই ছিল ব্রিটেন। আর জাপানের চোখে তখন বিশ্বজয়ের স্বপ্ন। জাপানিরা সে সময় চীনকে তছনছ করে দেয়। দখলে নেয় চীনের অনেক অঞ্চল। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, কোরিয়া, মিয়ানমার শেষ করে আমাদের ফেনী পর্যন্ত জাপানিদের উপস্থিতি ছিল। বিশ্বযুদ্ধের শেষ পরিণতি সবার জানা আছে। জাপানিরা করুণভাবে হার মানে মিত্রবাহিনীর কাছে। আমেরিকা তছনছ করে দেয় জাপানকে। জাপানে শুরু হয় আমেরিকান আগ্রাসন। দুনিয়ার ইতিহাসও বদল হয়। ইতিহাস সব সময় একরকম চলে না। পরাশক্তিরও ক্ষয় আছে।

একসময় বলা হতো, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যায় না। সেই ব্রিটেন এখন ব্যস্ত ব্রেক্সিটে তারা থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে। ব্রিটিশরা আমাদের এ ভূখ-ও শাসন করেছে দীর্ঘ সময়। এর মাঝে সবচেয়ে বড় নিষ্ঠুরতা ছিল পলাশীর যুদ্ধ। এ যুদ্ধে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়। পলাশী যুদ্ধের ১০ বছর পর ইংল্যান্ডে ফিরে যান যুদ্ধের খলনায়ক ব্রিটিশ বেনিয়া লর্ড ক্লাইভ। যাওয়ার সময় নিয়ে যান লুটের বিশাল অর্থ। এ অর্থের পরিমাণ কত? নবাব সিরাজউদ্দৌলার রাজ কোষাগার থেকে কলকাতায় প্রথম নিয়ে যান ১০০ নৌকাবোঝাই সোনা, রুপা, হীরা, জহরত। এর মধ্যে ২৫০ মিলিয়ন পাঠান কোম্পানির কোষাগারে। ২৩ মিলিয়ন ক্লাইভ নিয়ে যান ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে। তৎকালীন হিসাবে এর পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৩৪ হাজার ইউরো সমমানের। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ লুটের বাড়াবাড়ি নিয়ে কার্ল মার্কসও উৎকণ্ঠা ব্যক্ত করেছিলেন। তিনি তাঁর লেখনীতে সেই উৎকণ্ঠার কথা ব্যক্ত করেন।

 পরে লর্ড ক্লাইভও শান্তিতে ছিলেন না। তাঁর লুটপাট নিয়ে ব্রিটিশ সংসদে তুমুল আলোচনা হয়। হৈচৈ হয়। ব্রিটিশ ইতিহাসে এত বড় লুটেরার দেখা আর মেলেনি। প্রথম দিকে হাউস অব কমন্সের সেই আলোচনাকে আমলে নেননি ক্লাইভ। ভেবেছিলেন কী আর হবে? এত বড় ভারত তাঁর কারণেই কোম্পানি দখলে নেয়। লুটপাট করে। এর সুফল তো ব্রিটিশ সরকারই ভোগ করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই অহমিকা ভেঙে যায়। ক্লাইভের দুর্নীতির তদন্তে গঠিত হয় কমিটি। সম্পদের বিনিময়ে তদন্ত বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান লর্ড ক্লাইভ। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। বরং ব্রিটিশ সরকার ও সংসদ তদন্ত আরও জোরদার করে। হতাশায় পড়েন ক্লাইভ। লুটপাটের নায়ক ক্লাইভ ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর আত্মহত্যা করেন। নিজের শরীরে নিজেই ছুরি চালান। যন্ত্রণাকাতর মুখ নিয়ে ক্লাইভ বিদায় নেন জীবন থেকে। বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী একটা অভিযান চলছে, এ অভিযান যেন অব্যাহত থাকে।

লেখক : প্রধান সম্পাদক নিউজ টোয়েন্টিফোর ও সম্পাদক বাংলাদেশ প্রতিদিন।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল 

সম্পর্কিত খবর