সৌদি থেকে শূন্য হাতে ফিরলেন আরও ১৭৬ জন

সৌদি থেকে শূন্য হাতে ফিরলেন আরও ১৭৬ জন

অনলাইন ডেস্ক

নতুন বছরের শুরুতেও সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশিদের ফেরা অব্যাহত আছে। গতকাল শনিবার রাতে ও আজ রোববার দুপুর মিলে ১৫ নারীসহ ১৭৬ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গতকাল শনিবার রাত ১১ টা ২০ মিনিটে ও রাত দেড়টায় সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ ও এসভি ৮০২ দুটি বিমানযোগে দেশে ফেরনে ১০৬ জন।

আজ দুপুরে ফেরেন আরও ৭০ জন।

এছাড়া আজ রাতে আরও শতাধিক বাংলাদেশির ফেরার কথা রয়েছে। এ নিয়ে গত চার দিনে ৩১৭ জন ফিরলেন।  

বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের মাঝে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়।

গতকাল ফেরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেলিনা আক্তার ও শামিমা বেগম গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে ফিরেছেন।

তারা প্রথমে নিয়োগকর্তার বাড়ি থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ দুতাবাসের সেইফ হোমে।

একইভাবে নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার ও খাদিজা, সিরাজগঞ্জের রাশেদাসহ ১৫ জন নারী ফিরেছেন।

সৌদি আরবে পুরুষ কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযানও অব্যাহত আছে।

গতকাল ফেরা শহিদ মিয়া (৪০) জানান, আড়াই বছর আগে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে টাইলস ফিটিংয়ের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার সময় পথ থেকে ধরে কাজের পোষাকেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মাত্র চার মাস পূর্বে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হানিফ গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে যাবার পর পাসপোর্টে তিন মাসের এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হলে মালিক আর আকামা তৈরি করেনি। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশ ধরলে মালিক আর হানিফের দায়িত্ব না নিলে দেশে পাঠানো হলো হানিফকে।

একই সাথে ফিরেছেন টাঙ্গাইলের হামিদুল্লাহ, কুমিল্লার তোফাজ্জাল,সিলেঠট জেলার শুভ দেবনাথ।

দেশে ফেরা অনেক কর্মীর অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা দেওয়া হলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও গ্রেপ্তার কর্মীর দায়দায়িত্ব নিচ্ছে না বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, গতবছর ২০১৯ সালে সৌদি আরব থেকে ২৪ হাজার ২৮১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর নতুন বছরের শুরুর চার দিনে ফিরলেন ৩১৭ জন। সবাই ভবিষ্যত নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। এইভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তবে আমরা আশা করছি সরকারের নেওয়া সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে নারী নির্যাতন অন্তত কমবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর