২২ জানুয়ারি ফাঁসি হচ্ছে না নির্ভয়ার ধর্ষকদের

২২ জানুয়ারি ফাঁসি হচ্ছে না নির্ভয়ার ধর্ষকদের

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের মেডিকেল শিক্ষার্থী নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত চার আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর পিছিয়ে যাচ্ছে। চার ধর্ষকের একজন নতুন করে ফাঁসি মওকুফের আবেদন করায় আগামী ২২ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকরের কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। আজ বুধবার নয়াদিল্লি সরকার হাইকোর্টকে এ তথ্য জানিয়েছে।

আদালতে দিল্লি সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, আইনের সমস্ত বিকল্প শেষ হওয়া এবং প্রাণভিক্ষার আর্জি রাষ্ট্রপতি খারিজ করার পরেও ফাঁসির আগে ১৪ দিন সময় দিতে হয়।

তাই নিম্ন আদালতের নির্দেশ মতো ২২ জানুয়ারি ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব নয়।  

কিন্তু তার পরেও নির্ভয়াকাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত চার জনের অন্যতম মুকেশ সিংহের মৃত্যু রদের আর্জি খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, মৃত্যু পরোয়ানা জারি করার মধ্যে কোনো ভুল নেই।

গত ৭ জানুয়ারি চার জনের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছিল নিম্ন আদালত।

পাতিয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত সেশন জাজ জানিয়েছিলেন, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় তিহাড় জেলে চার দোষীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। এর মধ্যে নির্ভয়াকাণ্ডের দুই সাজাপ্রাপ্ত আসামি সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) দায়ের করেছিল।  

মঙ্গলবার সেই আবেদন খারিজ হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায় মুকেশ। তারপর মৃত্যু পরোয়ানা রদের আর্জি নিয়ে দ্বারস্থ হয় দিল্লি হাইকোর্টের। তার আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করতে পারেন। তাই আগেভাগে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করা বেআইনি।

বুধবার সেই মামলার শুনানিতে দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, জেল ম্যানুয়াল অনুযায়ী প্রাণভিক্ষার আর্জির সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যু পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে না সরকার। আবার প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হলেও তার পর ১৪ দিন সময় দিতে হয়।

সরকারের পক্ষে আইনজীবী রাহুল মেহরা আদালতে জানান, মুকেশ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতের প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছিল। সেই আর্জি খারিজ করে উপরাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে। এবার উপরাজ্যপাল সেই আর্জি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠাবে রাষ্ট্রপতির কাছে।

তবে রাহুল মেহরা এও বলেন, আমরা চাই তাড়াতাড়ি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ হোক। কিন্তু দোষীদের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ হওয়া এবং সব আর্জি খারিজ হওয়ার পরেই ফাঁসি কার্যকর করার প্রক্রিয়া শুরু করবেন তারা।

মুকেশের আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, মৃত্যু পরোয়ানা জারির মধ্যে কোনো ভুল নেই। এখন এ নিয়ে কোননো আপত্তি থাকলে বা পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকলে তার জন্য নিম্ন আদালতেই যেতে হবে আবেদনকারীকে। সেখানেই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জির বিষয়টি আদালতকে জানাতে হবে।  

নির্ভয়াকাণ্ডের চার দোষী বিনয় শর্মা, মুকেশ কুমার, পবন গুপ্ত ও অক্ষয়কুমার সিংহকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তারপর হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রাখে। এর পর সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জিও খারিজ হয়ে যায়।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল