ইরাক ছাড়বে না আমেরিকা, বাগদাদকে ওয়াশিংটনের হুঁশিয়ারি

ইরাকে মার্কিন সৈন্য। সংগৃহীত ছবি

ইরাক ছাড়বে না আমেরিকা, বাগদাদকে ওয়াশিংটনের হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে গত ৩ জানুয়ারি মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের জেনারেল কাসেম সোলাইমানি এবং ইরাকের আবু মাহদি আল মুহান্দেসি শহীদ হওয়ার পর মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে ইরাকের সংসদে একটি বিল পাশ করা হয়। ইরান মধ্যপ্রাচ্য থেকে সকল বিদেশি শক্তিকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় তাদের বিপদ হতে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তবে যুক্তরাষ্ট্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।

 

পেন্টাগনের মুখপাত্র জনাথন হফম্যান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "ইরাক থেকে সেনা সরিয়ে আনার কোনো পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের নেই। আমরা এখনো এ ব্যাপারে ইরাকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের সেনারা আপাতত সেখানেই থাকবে। এমনকি পশ্চিম এশিয়ায়ও আমাদের উপস্থিতি বজায় থাকবে। "  

পেন্টাগনের মুখপাত্র আরো দাবি করেন, "খুব শিগগিরি আমরা ইরাকে মার্কিন সেনা স্থানান্তরের কাজ শুরু করব এবং সিরিয়ায় আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমাদের সামরিক অভিযান বন্ধ হবে না।

"

এর আগে সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছিল, ইরাকি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মার্কিন সেনারা আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবে। তবে ইরাকি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র আব্দুল করিম খালাফ মার্কিন সেনাদের এ ধরণের অভিযান চালানোর কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, "ইরাকি  সেনাবাহিনীর প্রধান মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে একজোট হয়ে কোনো সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দেয়নি। ''

এদিকে, ওয়াশিংটন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদেল আব্দুল মাহদিকে হুশিয়ার করে দিয়েছে ইরাক থেকে মার্কিন সেনা বহিষ্কার করা হলে আমেরিকায় ইরাকের সমস্ত অর্থ সম্পদ জব্দ করা হবে। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা  রবার্ট উব্রায়ান বলেছেন, "আমেরিকা যখন ইচ্ছে করবে কেবল তখনই ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে তার আগে নয়। "

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মার্কিন সেনা বহিষ্কারের ব্যাপারে ইরাকি পার্লামেন্টে যে বিল পাশ হয়েছে তা আমেরিকার জন্য ছিল অপ্রত্যাশিত। বিল পাশের সাথে সাথেই তারা এটিকে পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানায়। আমেরিকা দাবি করে ইরাকের স্বার্থ ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ওপর নির্ভর করছে। মার্কিন কর্মকর্তারা ইরাকের কর্মকর্তাদেরকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন যাতে তারা সেনা বহিষ্কারের ব্যাপারে পার্লামেন্টে পাশ হওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন না করে।

মার্কিন সেনা বহিষ্কার করা হলে ট্রাম্প প্রথমে ইরাকের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। পরে তিনি বলেন, ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। আলোচনার টেবিলে ইরাকি কর্মকর্তারা মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি বলে দাবি করেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে, ইরাকে সেনা অবস্থান টিকিয়ে রাখতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখবে। প্রয়োজনে ইরাকের উপর নানা ধরণের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথও বেঁছে নিতে পারে দেশটি।