মোবাইলে পর্ন দেখলে ভয়াবহ বিপদে পড়ার শঙ্কা!

শুধু শারীরিক বা মানসিক নয়, আর্থিক ক্ষতিও ডেকে আনতে পারে মোবাইলে পর্ন দেখার অভ্যাস। প্রতীকী ছবি

মোবাইলে পর্ন দেখলে ভয়াবহ বিপদে পড়ার শঙ্কা!

অনলাইন ডেস্ক

পর্নোফির ক্ষতিকর দিক নিয়ে কম-বেশি জানা আছে সবার। তবুও নিষিদ্ধ এ 'আকর্ষণ' থেকে অনেকেই বের হয়ে আসতে পারেন না। অনেকেই পর্নোগ্রাফিতে এমনভাবে আসক্ত হয়ে পড়েন যে, রীতিমতো তিনি মানসিক রোগীতে পরিণত হন। শরীর, মন, সংসার- সবকিছুতেই পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব।

তবে মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখার অভ্যাস ডেকে আনতে পারে আরও কিছু ভয়াবহ বিপদ। আপনার অজান্তেই খালি হয়ে যেতে পারে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট! চুরি হয়ে যেতে পারে আপনার অনেক ব্যক্তিগত তথ্য!

অবিশ্বাস্য মনে হলেও স্মার্টফোনে পর্নোগ্রাফি দেখলে সেখানে স্টোর করা আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের কাছে অনায়াসেই পৌঁছে যেতে পারে। এ ছাড়াও ম্যালওয়্যারের আক্রমন-সহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

হ্যাকিং: অনলাইনে অনেক প্রতিষ্ঠান নিয়মিত গ্রাহকদের ইন্টারনেট সার্ফিং-এর হিসট্রি নজরদারিতে রাখে।

এই প্রতিষ্ঠানগুলি জানার চেষ্টা করে আপনি কী ধরণের বিজ্ঞাপন, বিষয়, ভিডিও বা ছবি দেখতে পছন্দ করেন। বেশিরভাগ মানুষই নিজের স্মার্টফোনে ফোন ব্যাঙ্কিং পাসওয়ার্ড, ইমেইল আইডি, ফেসবুক আইডি, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সেভ করে রাখেন। সাইবার অপরাধীরা খুব সহজেই মোবাইল লগ ইনের মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করে নিতে পারে। আর পর্নোগ্রাফির সাইটগুলিতে এই সব সাইবার অপরাধীরা ওঁত পেতে থাকেন। কুকিজ ডিলেট এবং প্রাইভেট ব্রাউজিং অপ্টিং করার মাধ্যমে অনলাইনে হ্যাকিং কিছুটা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে একেবারে ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

শিশু পর্নোগ্রাফি: অনলাইনে শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা অত্যন্ত বিপজ্জনক। হ্যাকররা খুব সহজে এ সব পর্নোগ্রাফির দর্শকদের মোবাইল স্টোরেজ বা তথ্য কাজে লাগাতে পারে অপরাধ মূলক কাজে। মোবাইল স্টোরেজ থেকে চুরিও করতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য।

পর্ন টিকার: শুধুমাত্র সার্ভিস প্রোভাইডারই নয়, অ্যাপ এবং ব্রাউজার যারা ট্রাকিং করছেন তারাও আপনার মোবাইল অ্যাক্টিভিটি নজরে রাখে। এটি গ্রাহকের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। স্মার্টফোনে পর্ন ছবি বা ভিডিও দেখার সময় পর্ন টিকার বা ভুয়া মোবাইল অ্যাপ চলে আসতে পারে। আর এই সব ভুয়া অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকের ব্যক্তিগত এবং মূল্যবান তথ্য অনায়াসেই চুরি করতে পারে হাজার মাইল দূরে থাকা কোনো হ্যাকার।

অপ্রয়োজনীয় পেইড সার্ভিস: পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইটগুলিতে প্রতি মুহূর্তে গ্রাহকদের জন্য নতুন নতুন ‘পেইড সার্ভিস’-এর অপশন আসতে থাকে। পর্নোগ্রাফি ওয়েবসাইট ঢুকতে গিয়ে মোবাইল গ্রাহকদের অজান্তেই এমএমএস, এসএমএস, প্রিমিয়াম এসএমএস, ডব্লিইএপি-সহ একাধিক পরিষেবা চালু হয়ে যায়। এই সব পরিষেবা অ্যাক্টিভ করার মাধ্যমে টাকা আয় করে ওই সাইটগুলো। আপনার অজান্তেই আঙুলের আলতো ছোয়ায় চালু হয়ে যেতে পারে এমন অনেক সার্ভিস।

র‌্যানসমওয়্যার: অনলাইনে টাকা দিয়ে যারা পর্নোগ্রাফি দেখেন তাদের ট্রাক করা হ্যাকারদের জন্য খুবই সোজা। আর মোবাইল হ্যাক করে তার আংশিক বা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হ্যাকাররা নিয়ে নিতে পারে। তখন এমনও হতে পারে গ্রাহক চাইলেও অনেক সার্ভিস থেকে বের হতে পারছে না। এমনকি মোবাইল বন্ধ করতে চেয়েও পারছে না। এই ধরণের প্রতারণাকে বলে র‌্যানসমওয়্যার। গ্রাহকরা পর্নোগ্রাফি দেখতে কোনও অচেনা ওয়েবসাইটে ঢুকলেই নতুন একটি পপ আপ উইন্ডো মোবাইল স্ক্রিনে ফুটে উঠবে। এই পপ আপ উইন্ডো আপনার মোবাইল লক করে দিতে পারে, হ্যাঙ্গ করে দিতে পারে। ফোন মেমোরি থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাকারদের হাতে পৌঁছে যেতে পারে বা মুছে দিতে পারে।