‘অপহরণকালে সিএনজি থেকে পড়ে জেরিনের মৃত্যু হয়’

‘অপহরণকালে সিএনজি থেকে পড়ে জেরিনের মৃত্যু হয়’

অনলাইন ডেস্ক

বখাটে যুবকের প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় জীবন দিতে হয়েছে মেধাবী ছাত্রী মদিনাতুল কোবরা জেরিনকে। এর আগে তার মৃত্যুকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমনটিই জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, জেরিনের মৃত্যু প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনা মনে করা হতো।

মূলত সেটি সড়ক দুর্ঘটনা ছিল না। একই গ্রামের দিদার হোসেনের ছেলে জাকির হোসেন প্রায়ই জেরিনকে প্রেম প্রস্তাব দিত। তবে কখনোই জেরিন এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকির তার বন্ধুদের সহযোগিতায় জেরিনকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়।

‌‘গত রোববার সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় জেরিনের বাড়ির সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখে জাকির। এ সময় জেরিন স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েই সিএনজিতে উঠে যায়। পথিমধ্যে জাকির হোসেন ও তার সহযোগী হৃদয় একই সিএনজিতে উঠে জেরিনকে আবারও প্রেম নিবেদন করে। জেরিন রাজি না হওয়ায় জাকির হোসেন তাকে অপরহরণ করার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এরই এক পর্যায়ে জেরিন সিএনজি থেকে পড়ে যায়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন জেরিনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সোমবার সকালে সে মারা যায়।

এদিকে, তার মৃত্যুর সংবাদ সহপাঠীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা সড়ক অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করে। জেরিনের সহপাঠীদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। এ ঘটনায় জাকির হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে সে ঘটনার বর্ণনা দেয়। পরে মঙ্গলবার বিকেলে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয় জাকির।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, সোমবার রাতে নিহত জেরিনের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় জাকির হোসেন ছাড়াও আরো ৩/৪ জনকে অজ্ঞাত করে আসামি করা হয়েছে। জবানবন্দি প্রদান শেষে আসামি জাকিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিএনজি ড্রাইভার নুর আলম ও তার সহযোগী হৃদয়কে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এ কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য, নিহত জেরিন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে ও রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিল। এর আগেও পিএসসি ও জেএসসিতে সে এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর