বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণে ১৯ হাজার পরিবার সাবলম্বী

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষুদ্র ঋণ। তবে কোনো রকম সার্ভিস চার্জ বা সুদ নেই। অসচ্ছলদের সাবলম্বী করতে এমন ঋণ দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের হতদরিদ্র পরিবারকে। যা পেয়ে এরই মধ্যে ভাগ্য পাল্টে ফেলেছেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার অনেক হতদরিদ্র পরিবার।

২০০৫ সাল থেকে এমন সুদমুক্ত ঋণ দিয়ে যাচ্ছে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন। এখন পর্যন্ত ১৯ হাজারেরও বেশি দরিদ্র পরিবারকে আনা হয়েছে এই ঋণ সুবিধার আওতায়। পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় শর্তহীন এই ঋণ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কতৃপক্ষ।

ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ঘুরে সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বাবু কামরুজ্জামান।

ছবি তুলেছেন কামাল হোসেন।

প্রায় একযুগ আগে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ৫ হাজার টাকা ঋণ পেয়ে একটি গরুর বাছুর কেনেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দুর্গারামপুর গ্রামের গৃহিণী মৃনারা বেগম। এতে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সেই বাছুর থেকে এখন তার গরুর সংখ্যা ৫টি।   

তিনি জানাচ্ছেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ৫ হাজার টাকা ঋণ ও নিজেদের কিছু টাকা দিয়ে আজ তিনি সাবলম্বী। এখন তিনি প্রতিদিন গাভীর দুধ বিক্রি করেন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার।  

একই গ্রামের কৃষক আরশ মিয়া বলেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ নিয়ে শুধু গরু নয়, কিছুটা জমির মালিকও হয়েছেন তিনি।  

পিছিয়ে থাকা হতদরিদ্র নারীদের আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে সম্প্রতি উপজেলার দুর্গারামপুরে আয়োজন করা হয় বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ৫৪তম সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত আসর। এদিন হতদরিদ্র নারীদের সাড়ে ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ তুলে দেওয়া হয় কোনো রকম শর্ত ছাড়াই।  

শর্তমুক্ত ঋণ পাওয়ার পর উচ্ছ্বসিত ওই নারীরা বলেন, অন্য কোথাও থেকে ঋণ নিলে সুদ, লাভ, চার্জ দেয়া লাগে। কিন্তু বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ নিলে এসব কিছু দেওয়া লাগে না। ফলে আমাদের ইউনিয়নের সবাই এখন ঋণ নিয়ে কৃষি কাজসহ গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি পালছেন এবং সাবলম্বী হয়ে উঠছেন।  

বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে এখন পর্যন্ত পৌনে দুই কোটি টাকা অর্থায়ন করা হয়েছে অসচ্ছলদের মাঝে। ভবিষ্যতে যা আরও বাড়বে বলে জানান বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ময়নাল হোসেন চৌধুরী।

তিনি বলেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই হোমনা ও নবীনগর উপজেলায় এই ঋণ প্রদান কার্যক্রম শুরু করা হবে। আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বলদের এই ঋণ দিয়ে তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ ফিরিয়ে আনা।  

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৮০টি গ্রামে চলছে এই ঋণ বিতরণ কার্যক্রম। এর মধ্যে সুফল নিয়েছেন ১৯ হাজারেরও বেশি দরিদ্র পরিবার।  

অর্থনীতির মূলধারায় যারা বরাবরই অবহেলিত ও পিছিয়ে থাকেন সেইসব তৃণমূল মানুষকে সামনে নিয়ে এসে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতির ছবি।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর