চীনে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতি বর্ণনা করলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী (ভিডিও)

অনলাইন ডেস্ক

চীনে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে করোনা ভাইরাস। চীনের গণ্ডি পেরিয়ে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে ১৬টি দেশে।  সারা বিশ্ব এ নিয়ে উদ্বিঘ্ন। দেশটির সরকার সেখানকার কয়েকটি এলাকা অনেকটা সিলগালা করে রেখেছে।

সেখানে বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার কাউকে বেরও হতে দেওয়া হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৬ জনে। আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজারের বেশি নাগরিক।
বাংলাদেশি অনেক শিক্ষার্থী ছাড়াও কর্মজীবী রয়েছে দেশটিতে। এছাড়া বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে চীন ও বাংলাদেশি নাগরিকদের দুই দেশে আসা-যাওয়া রয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতে সেখানে অবস্থান করা বাংলাদেশিরা দেশে ফিরতে উদগ্রিব। অনেকে ফেরতও এসেছেন গত কয়েকদিনে। তবে বর্তমানে অনেকে চাইলেও আসতে পারছেন না। কেউ আবার দেশের কথা ভেবে আসছেন না।

দেশের কথা ভেবে আপাতত দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চীনের ইয়াননান প্রদেশের কুনমিং সিটিতে অবস্থান করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বর্ণ সিদ্দিকী। তিনি এক ভিডিও বার্তায় সেখানকার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেছেন তিনি। চীনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা চীনেই আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তেমন খবর আসছে না। আমি আমার চাইনিজ বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি যা বহির্বিশ্বের গণমাধ্যমে তেমন খবর প্রকাশ পাচ্ছে না। চীন সরকার চাচ্ছে না যে এই ভাইরাসটার কারণে অন্যরা উদগ্রিব হোক।   

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে এই ভাইরাসের প্রভাব চীনের অর্থনীতিতেও পড়েছে। আমি ইতিমধ্যে অনেকগুলো বাজার ঘুরেছি, আগে এসব বাজারে শাক-সবজির কোন ঘাটতি না থাকলেও এখন কোনো কাঁচা তরকারি পাওয়া যাচ্ছে না। যা পেয়েছি তা শুষ্ক খাবার।  

এদিকে চীনের উহান শহরে প্রায় তিনশ’রও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে বলে জানা গেছে। এরা সবাই উহান শহরে নিজেদের কক্ষে প্রায় বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। জানা গেছে, উহান শহরে থাকা বিদেশি নাগরিকদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ছাড়বে না চীন। এমনকি সেখানে নতুন করে কাউকে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না। প্রদেশটিতে সরকার নিয়ন্ত্রিত সুপার শপ ছাড়া সকল দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে।

বর্ণ সিদ্দিকী বলেছেন, এই মুর্হূতে দেশের স্বার্থে আমি আমার মাতৃভূমিতে যাবো না। চীনে আমরা শিক্ষার্থী ছাড়াও আরও হাজার হাজার বাংলাদেশি আছেন। আমরা জানি না এই রোগটা কার কাছে চলে এসেছে। এই রোগটার একটা অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, এটি শরীরে আসার পর থেকে ১৪ দিন অবস্থান করবে এবং কোনো লক্ষণও প্রকাশ করবে না। এখন আমরা যারা এখানে আছি তারা যদি দেশে ফিরে যাই তাহলে নিজের অজান্তেই কারো না কারো সাথে এই ভাইরাস দেশে চলে যেতে পারে। তাই দেশের সার্থে এখন চীনে থাকাই ভালো।   

অন্যদিকে চীনের উহান নগরী থেকে ছড়ানো করোনা ভাইরাসের বিস্তারে প্রাণে বাঁচতে যেসব বাংলাদেশি দেশে ফিরতে চান তাদের আরও ১৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় দুপুরে বেইজিংয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।