আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসে এ পর্যন্ত ১৭০ জন নিহত হলেও কয়েক হাজার গুরুতর অসুস্থ। বিশ্বের দেশে দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে।
এরইমধ্যে অন্তত ১৭টি দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।চীন পেরিয়ে এই ভাইরাস এশিয়া-ইউরোপ সহ বিশ্বের আরো ১৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এবার চীনের প্রতিবেশি দেশ ভারতেও ঢুকে পড়েছে করোনা ভাইরাস। কেরালার স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, কেরালা প্রদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এক ছাত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে টুইট করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। আক্রান্ত ছাত্র উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের। আপাতত তাকে হাসপাতালে আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, আরো ছয়জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্য প্রতিনিধিরা।
এখন পর্যন্ত চীন বা অন্য কোনো দেশ এই ভাইরাসের কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি।
তাই সর্দি-কাশি হলেই করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন মনে করে আতঙ্কিত হচ্ছেন কেউ কেউ।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে পরামর্শ ও নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
ডব্লিউএইচও'র ২০ পরামর্শ-
১। সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে।
২। মাংস ও ডিম অবশ্যই যথাযথ তাপে ও ভালোমত রান্না করে খেতে হবে।
৩। রোগে ভুগে মারা যাওয়া বা অসুস্থ প্রাণীর মাংস একেবারেই খাওয়া চলবে না।
৪। হাঁচি ও কাশি দিলে অবশ্যই টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে। এরপর টিস্যু ফেলে দিতে হবে নির্ধারিত স্থানে। এবং অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে।
৫। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার পর হাত ধুতে হবে।
৬। হাতে গ্লাভস না পরে বা নিজে সুরক্ষিত না থেকে কোনো অসুস্থ ব্যক্তির মুখ ও দেহ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৭। বিড়াল, কুকুর বা পোষা পাখির যত্ন নিলে বা স্পর্শ করলে হাত ধুতে হবে। প্রাণিবর্জ্য ধরার পর সঙ্গে সঙ্গে হাতে ধুয়ে জীবাণু মুক্ত করতে হবে।
৮। শরীরে যে কোনো সংক্রমণ এড়াতে রান্না ও খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
৯। কাঁচা মাংস, সবজি, রান্না করা খাবার কাটার জন্য ভিন্ন চপিং বোর্ড ও ছুরি ব্যবহার করতে হবে।
১০। কাঁচা মাংস, সবজি ও রান্না করা খাবার হাতে ধরার আগে অবশ্যই প্রত্যেকবার হাত ধুয়ে নিতে হবে।
১১। কাঁচা বাজারে গিয়ে কোনো প্রাণী ও প্রাণীর মাংস হাতে ধরলে দ্রুত হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।
১২। কাঁচা বাজারে অবস্থানের সময় অযথা মুখে-চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৩। অবশ্যই প্রতিদিন ধোয়া কাপড় পড়তে হবে। একই কাপড় একদিনের বেশি পরা ঠিক নয়। নিয়মিত কাপড় ধুতে হবে।
১৪। জ্বর-সর্দি অনুভূত হলে যে কোনো ভ্রমণ বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও ওষুধ খেতে হবে।
১৫। ভ্রমণে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
১৬। জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৭। নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক না থাকলে নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে। একবার মাস্ক পরলে তা বার বার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
১৮। একবার মাস্ক ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হবে। মাস্ক ধরার পর হাতে ধুয়ে নিতে হবে।
১৯। রোগের ইতিহাস থাকলে চিকিৎসককে বিস্তারিত জানাতে হবে।
২০। যেখানে সেখানে থুথু ফেলা যাবে না। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে লক্ষণ - নতুন এ করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। শুরুটা হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্টও।
আরও পড়ুন: ‘হোমিওপ্যাথিতেই করোনা প্রতিরোধ’
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)