‘ক্রসফায়ারের ভয় দেখানোয়’ সাত পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

‘ক্রসফায়ারের ভয় দেখানোয়’ সাত পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

অনলাইন ডেস্ক

‌‌‌‌ক্রসফায়ার ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগে ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাত সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

তারা হলেন- উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ মাহমুদুল হাসান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফরহাদ আলী, কনস্টেবল মোজাম্মেল হক, আবদুল জব্বার, সুমন মিয়া, শ্রী রাজীব চন্দ্র সরকার ও আবু রাসেল।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. সোহেল বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ওই পুলিশ সদস্যদের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর গতকাল শুক্রবার তাঁদের বরখাস্ত করা হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার।

তিনি বলেন, এই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এসেছে। তদন্তের নিরপেক্ষতার স্বার্থে তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষে পুরো বিষয়টি জানা যাবে।

ব্যবসায়ী সোহেল ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের নাজিরাবাগ এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন।

পরিবার বলছে, তিনি ফুটপাতে লুঙ্গির ব্যবসা করেন। পুলিশ সুপারের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে সোহেল বলেছেন, গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে রাজধানীর সদরঘাট থেকে বাসায় ফেরার পথে লালকুঠির নৌকাঘাটে হঠাৎ করে পাঁচ-ছয়জন লোক তাঁকে ঘিরে ধরে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে হাতকড়া পরায়। পরে নৌকায় করে বুড়িগঙ্গা নদী পার করে কেরানীগঞ্জের আলম মার্কেটের সামনে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকে রাখা একটি নম্বরপ্লেটবিহীন সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তাঁকে তোলা হয়।

এরপর কালো রঙের কাপড় দিয়ে তাঁর চোখ বেঁধে ফেলা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় একটি অজ্ঞাত স্থানে। সেখানে তাঁর হাতের আঙুলে প্লাস দিয়ে চাপ দেওয়া হয়। লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়। এরপর তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। তাঁর মুঠোফোনে পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে তাঁকে দিয়ে বলানো হয়, মুক্তিপণ দিলে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

ব্যবসায়ী সোহেলের স্ত্রী সাবরিনা আবেদিন বলেন, ন্যায়বিচার এবং টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তারা অভিযোগটি করেন। কিন্তু এরপর থেকে তাঁরা ভয়ে আছেন। বিভিন্ন মুঠোফোন নম্বর থেকে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সাবরিনা।

ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ সুপার ওই দিনই তাঁকে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর তাঁদের বরখাস্ত করা হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর